শারদ উৎসব এলেই যদি একটু বেশি ফুল বিক্রি হয় ভেবে দিন গোনা শুরু। কিন্তু এ বার দুর্গাপুরের বিভিন্ন বাজারে পদ্মফুলের জোগান বেশি থাকায় ভাল উপার্জন তেমন হচ্ছে না বলেই দাবি চাষি ও ব্যবসায়ীদের।
শারদোৎসবের ক্ষেত্রে দুর্গাপুরের নামডাক রয়েছে বহু বছর ধরেই। আর দুর্গাপুজো পদ্মফুল ছাড়া হয় না। পুজো কমিটিগুলির সূত্রে জানা গিয়েছে, এক একটি পুজোতে কয়েকশো পদ্মফুলের প্রয়োজন হয়। পদ্মফুলের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ফি বছরই কাঁকসা, বুদবুদ, গলসি, এমনকী পাশের জেলা বাঁকুড়া থেকেও বহু চাষি শহরে এসে পাইকারি বাজারে ফুল বিক্রি করেন।
কিন্তু এ বারে পদ্মফুল তেমন হাসি ফোটাচ্ছে না বলেই জানান চাষিরা। কারণ,এ বছর বাজারে না কি বাজারে পদ্মফুলের জোগান প্রচুর। দুর্গাপুর বাজারে প্রতিদিনই ভোরবেলা বহু চাষিই পদ্মফুল নিয়ে এলেও তেমন দাম পাচ্ছেন না বলে খবর। মঙ্গলবার গলসির কুরকুবা গ্রাম থেকে এসেছিলেম উত্তম হাজরা। তিনি জানান, এ বছর অবস্থা এমনই যে, প্রতিটি পদ্মফুলের দর মিলছে দু’টাকা বা তারও কম। উত্তমবাবুর মতো বেশ কয়েক জনের দাবি, এলাকায় ফুল রাখার হিমঘর না থাকার কারণে সমস্যায় বেড়েছে। বাঁকুড়া বা অন্য কোথাও হিমঘরে ফুল রাখতে গেলে খরচে পোষাবে না বলেও জানান তাঁরা।
এ বছর বাজার পদ্মে ছেয়েছে কেন? চাষিরা জানান, বেশি শিশির পড়লে পদ্মফুলের উৎপাদনে বাধা পড়ে। এ বার তেমনটা না হওয়ায় উৎপাদন ভালই হয়েছে। দুর্গাপুরের বিভিন্ন ফুল ব্যবসায়ীরা জানান, পুজোর মরসুমে কয়েক দিন ধরেই বাজারে পদ্মফুলের জোগান বাড়তে থাকে। গত বছর প্রথম দিকে পদ্মফুলের দাম কম থাকলেও পুজোর কাছাকাছি সময়ে দাম এক লাফে বেশ খানিকটা বেড়ে যায়। কিন্তু এ বছর তেমনটা হবে না বলেই মনে করছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ।
এই পরিস্থিতিতে ফুল ব্যবসায়ী আদিত্য ঘড়ুই বলেন, ‘‘এলাকাতে বহুমুখী হিমঘর থাকলে, ফুল রাখা যেত। পদ্মের দামও মিলত। ফুল নষ্ট হওয়ার ভয়ে চাষিরা কম দামেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।’’ দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘জেলাস্তরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত এই এলাকায় একটি বহুমুখী হিমঘর তৈরি হবে।’’