জেলায় ভোটের আগে পশ্চিম বর্ধমানের নানা প্রান্তে শেষ প্রচারে মুনমুন সেন। —নিজস্ব চিত্র।
আবহাওয়া দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দিনের তাপমাত্রা একসময়ে প্রায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছিল। তার সঙ্গে যোগ হয়েছিল গরম হাওয়া। কিন্তু এই প্রচণ্ড গরমকেও হার মানাল ভোটের উষ্ণতা। শনিবার আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারের শেষ মুহূর্তে পথে নামলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মীরা।
এ দিন অণ্ডালে মোটরবাইকে চড়ে প্রচার সারেন বাবুল সুপ্রিয়। বহুলাগ্রাম, বহুলাবাজার, ছোড়া প্রভৃতি এলাকায় তিনি প্রচার করেন। প্রচার-পর্বে তিনি জনতাকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘‘আপনারা পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিজের ভোট নিজে দিতে পারেননি। এ বার প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। নির্ভয়ে ভোট দিন।” বারাবনিতে রোড শো করেন বাবুল।
প্রচারের শেষ দিনেও এলাকার শিল্প পরিস্থিতি নিয়ে সরব হন সিপিএম প্রার্থী গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বে কাজোড়া গ্রাম, সেন্ট্রাল কাজোড়ো কোলিয়ারি প্রভৃতি এলাকায় মিছিল হয়। পরে একটি পথসভায় তিনি বলেন, ‘‘এটা খনি এলাকা। একে একে ইতিমধ্যেই ২০টা খনি কয়লা মন্ত্রক বন্ধ করে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার কয়লা শিল্পের বেসরকারিকরণের পথে হাঁটছে। এর বিরুদ্ধে সংসদে সরব হতেই হবে।’’ বারাবনি, হিরাপুরের কুলটি কারখানা লাগোয়া এলাকায় প্রার্থীকে ছাড়া বাড়ি বাড়ি প্রচার সারে সিপিএম।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ দিন জামুড়িয়ার শ্যামলা পঞ্চায়েতের খোট্টাডিহি কমিউনিটি হলে ও চিচুড়িয়া পঞ্চায়েতের বাগডিহা-সিদ্ধপুরের সংযোগস্থলে এক জায়গায় দু’টি কর্মিসভার আয়োজন করে তৃণমূল। সেখানে যোগ দিয়ে তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেনের বার্তা, ‘‘আমি চাই, দলীয় কর্মীরা ভোটের দিন মারামারিতে যেন না জড়ান। কেন্দ্রীয় বাহিনী তাদের কাজ করবে। তাতে ভোটারদের পাশাপাশি আমাদেরও সুবিধা হবে।’’ এ ছাড়া বারাবনির নানা এলাকায় তৃণমূল প্রচার চালিয়েছে। কুলটিতে মুনমুনের সমর্থনে সভা করেন তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কুলটিতে মিছিল করে সিপিএম-ও। সেখানে অটোয় করে কংগ্রেস ও বিজেপির প্রচার চলে। সীতারামপুরে বাড়ি বাড়ি প্রচার সারেন কংগ্রেস প্রার্থী বিশ্বরূপ মণ্ডলও।
শেষ প্রচারে বিজেপি। —নিজস্ব চিত্র।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রচার চলেছে আসানসোলেও। এ দিন শহরের দুর্গা মন্দির থেকে গির্জা মোড় পর্যন্ত বিজেপির রোড শোয়ে যোগ দেন বাবুলের স্ত্রী রচনা, বড় মেয়ে শর্মিলি।
তবে প্রচারের পারদের সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রার পারদও এ দিন চড়তে দেখা গিয়েছে। নানা প্রার্থীদের কাউকে বারবার ঘাম মুছতে, কাউকে আবার ঘন ঘন জল খেতে দেখা যায়। প্রচারে ফাঁকে খানিক জিরিয়ে নিতেও দেখা যায় প্রার্থীদের এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কর্মীদের। বাবুল বলেন, ‘‘এমন গরম পাঁচ বছর ধরেই তো দেখেছি। পুরসভা, বিধানসভা, পঞ্চায়েত ভোটের আগেও এমন গরমেই প্রচার করেছি। তাই আর নতুন কিছু মনে হচ্ছে না।’’ মুনমুন অবশ্য বলেন, ‘‘গরম রয়েছে ঠিকই, তবে বাঁকুড়ার থেকে কম।’’ সিপিএম প্রার্থী গৌরাঙ্গবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি তো এখানেরই ছেলে। এখানকার রোদ, গরম, সবই আমার চেনা।’’