পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানায়। নিজস্ব চিত্র
সাপ্তাহিক লকডাউনের আগের দিন, মঙ্গলবার পুলিশের পক্ষ থেকে মাইক নিয়ে করে সচেতনতার প্রচার করা হয়েছিল। বিনা কারণে ‘লকডাউন’ ভাঙলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে, সে কথা প্রচারও করা হয়েছিল। তার পরেও বুধবার ‘লকডাউন’ অমান্য করার অভিযোগে জেলা থেকে মোট ১১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর ও কাঁকসা থানা এলাকা থেকে মোট ৩২, কোকআভেন, নিউ টাউনশিপ, অণ্ডাল, পাণ্ডবেশ্বর, লাউদোহা (ফরিদপুর), রানিগঞ্জ, আসানসোল উত্তর ও দক্ষিণ, হিরাপুর, বারাবনি, সালানপুর থেকে যথাক্রমে ৬, ১, ২, ৬, ৪, ১৭, ১১, ৪, ৭, ৪, ৪, ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া, বুদবুদ, জামুড়িয়া ও কুলটি থেকে এক জন করে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের ডিসি পূর্ব অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘দিনের পর দিন প্রচার করা সত্ত্বেও অনেকে বদলাচ্ছেন না। প্রয়োজন হলে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে দুর্গাপুরে বেনাচিতিতে কয়েকটি চায়ের দোকান খুলেছিল। অনেকে চা খেতে জটলা করতে শুরু করেন। রাস্তার ধারে গুমটিতে করে আনাজ বিক্রি করতেও শুরু করেছিলেন কেউ কেউ। খবর পেয়ে পুলিশের টহলদারি গাড়ি পৌঁছয়। দোকান-পাট বন্ধ করে দেয় পুলিশ। একই সঙ্গে রাস্তায় বেরনো মানুষজনকে আটকে জেরা শুরু করে পুলিশ। প্রয়োজন ছাড়া যাঁরা বেরিয়েছিলেন, তাঁদের আটক করে পুলিশ। তবে পরের দিকে পুলিশি কড়াকড়িতে আর সে ভাবে রাস্তায় বেরোতে দেখা যায়নি মানুষজনকে।
তবে আসানসোলে এ দিন খোলেনি দোকান-বাজার। ‘লকডাউন’ সফল করতে বুধবার ভোর থেকে শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন রাস্তায় পুলিশের গাড়ি টহল দিয়েছে। সকালে শহরের বিভিন্ন পেট্রল পাম্পে গিয়ে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয় পুলিশ। পুলিশ জানায়, ‘লকডাউন’কে ছুটির দিন ভেবে অনেকেই গাড়ি নিয়ে অযথা ঘুরে বেড়ান। সেই প্রবণতা বন্ধ করতেই এই উদ্যোগ, বলে জানিয়েছেন পুলিশ আধিকারিকেরা।
অন্য বারের মতো এ দিনও পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানায় কড়া নজরদারি ছিল। বরাকর, ডুবুরডিহি, রূপনারায়ণপুর ও রুনাকুড়া ঘাট পেরিয়ে ঝাড়খণ্ড থেকে আসা মানুষজন ও গাড়িকে আটকে দেয় পুলিশ। এক মাত্র জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত গাড়িগুলিকে ছাড়া হচ্ছে। ডিসেরগড়ের সুভাষ সেতুতে পুরুলিয়া জেলা থেকে আসা গাড়ি ও পথচারিদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে এ দিন। ডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘লকডাউনে সীমানা এলাকা পুরোপুরি ‘সিল’ করার নির্দেশ এ বারও পালন করেছে পুলিশ।’’ এ দিনের ‘লকডাউন’ও পুরোপুরি সফল বলে মন্তব্য করেছেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি। তবে বাসিন্দাদের একাংশের মতো, লকডাউনের পরের দিন বাজারে উপচে পড়া ভিড় হওয়া বন্ধ করা না গেলে ‘লকডাউন’ পুরোপুরি সফল হল বলা যাবে না।