বাজার মন্দ, বামুনাড়ায় কারখানা বন্ধের নোটিস

মাঝ রাতে নোটিস দিয়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য উৎপাদন বন্ধের কথা জানিয়ে দিলেন কাঁকসার বামুনাড়ার একটি বেসরকারি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা কর্তৃপক্ষ। সকালে কাজে গিয়ে তা দেখে মাথায় হাত শ’দুয়েক ঠিকাকর্মীর। কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, এক দিকে কাঁচামালের জোগান নেই। অন্য দিকে, বাজারের হাল খারাপ। এমন অবস্থায় কারখানা চালানো সম্ভব নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৫ ০১:২৮
Share:

কাঁকসার বামুনাড়া শিল্পতালুকের সেই কারখানা। ইনসেটে কারখানার গেটে সাঁটানো উৎপাদন বন্ধের নোটিস। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

মাঝ রাতে নোটিস দিয়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য উৎপাদন বন্ধের কথা জানিয়ে দিলেন কাঁকসার বামুনাড়ার একটি বেসরকারি স্পঞ্জ আয়রন কারখানা কর্তৃপক্ষ। সকালে কাজে গিয়ে তা দেখে মাথায় হাত শ’দুয়েক ঠিকাকর্মীর। কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, এক দিকে কাঁচামালের জোগান নেই। অন্য দিকে, বাজারের হাল খারাপ। এমন অবস্থায় কারখানা চালানো সম্ভব নয়। কারখানার অন্যতম কর্ণধার বিকাশ অগ্রবাল বলেন, ‘‘পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত কারখানা চালুর সম্ভাবনা নেই।’’
বামুনাড়ায় এই কারখানাটি গড়ে ওঠে ২০০৬ সালে। এখানে ইনগট, কনকাস্ট উৎপাদন হয়। ঠিকা শ্রমিক রয়েছেন ১৬৫ জন। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন আকরিক কাঁচামালের জোগানে ঘাটতি রয়েছে। আবার উৎপাদিত পণ্যেরও বাজার নেই। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত কয়েক মাস ধরে উৎপাদন ক্ষমতার সামান্য কাজে লাগিয়ে কোনও রকমে কারখানা চালানো হচ্ছিল। কিন্তু পরিস্থিতি এ বার হাতের বাইরে চলে যাওয়ায় উৎপাদন আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কারখানার কর্ণধার বিকাশবাবু বলেন, ‘‘আর কোনও ভাবে সম্ভব নয়। তাই অনির্দিষ্ট কাল কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।’’

Advertisement

প্রতি দিনের মতো সোমবার সকালেও কাজে গিয়েছিলেন কারখানার কর্মীরা। কিন্তু তার আগে রাতেই কারখানার গেটে নোটিস সাঁটিয়ে দিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। তা দেখে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান ঠিকা শ্রমিকেরা। কারখানার গেটে বেশ কিছুক্ষণ জটলা করেন তাঁরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনা কয়েক ঠিকাকর্মী বলেন, ‘‘আগে থেকেই কানাঘুষো শুনছিলাম, কারখানা যে কোনও দিন বন্ধ হয়ে যাবে। তবু আশায় ছিলাম। কিন্তু আজ সব শেষ হয়ে গেল।’’ তাঁরা জানান, কী ভাবে সংসার চলবে, তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না। কারণ, কারখানায় অদূর ভবিষ্যতে ফের উৎপাদন চালু হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নোটিসে নেই। সিটু নেতা নারায়ণ শ্যাম বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের তরফে ফের কারখানা খোলার কোনও নির্দিষ্ট আশ্বাস পাওয়া যায়নি। কর্মীরা সবাই সংশয়ে রয়েছেন।’’ কারখানার কর্ণধার বিকাশবাবুর অবশ্য আশ্বাস, ‘‘পরিস্থিতি পাল্টালে ফের কারখানা চালু করা হবে।’’ তখন কর্মীরা আবার কাজ পাবেন বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

কাঁচামালের জোগানে ঘাটতি ও বাজারে অভাবের কারণ দেখিয়ে গত ৪ জুন বাঁশকোপার একটি কারখানার ফেরো-অ্যালয় বিভাগে উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার ফলে কাজ হারান প্রায় দু’শো ঠিকা শ্রমিক। ইস্পাত শিল্পের উপরে নির্ভরশীল শিল্পে অনিশ্চয়তার কারণে গত কয়েক মাসে কাজ হারিয়েছেন কয়েকশো ঠিকা শ্রমিক। সোমবার থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেল বামুনাড়ার কারখানাটিতেও। এই ধরনের শিল্প সংস্থার মালিকদের একটি সংগঠনের পক্ষে শঙ্করলাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘অধিকাংশ চালু কারখানাতেই ক্ষমতার এক তৃতীয়াংশের বেশি উৎপাদন হয় না। বহু কারখানাই ধুঁকছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement