প্রতীকী ছবি
আত্মীয়কে উত্ত্যক্ত করতেন পড়শি। প্রতিবাদ করায় তাঁকে কুপিয়ে খুনের দায়ে এক প্রৌঢ়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল কাটোয়া আদালত। বৃহস্পতিবার কাটোয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সন্দীপ চৌধুরী কাটোয়ার কুলগাছির বাসিন্দা দীপঙ্কর ঘোষকে ওই সাজা শোনান। সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছে সাজাপ্রাপ্তের পরিবার।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৬ ডিসেম্বর রাত ৮টা নাগাদ কাটোয়া ২ ব্লকের ছোটকুলগাছি গ্রামে নিজের বাড়ির সামনের একটি জমিতে দেহ মিলেছিল পরানকৃষ্ণ ঘোষের (৪৭)। পরের দিন তাঁর স্ত্রী শিখা ঘোষ অভিযোগ করেন, পড়শি দীপঙ্কর ঘোষ দা দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছেন পরানকৃষ্ণ বাবুকে। পুলিশ তদন্তে নেমে জামতে পারে, পরানবাবুর এক বৌদি সুচিত্রা ঘোষকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করত দীপঙ্কর। বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও ওই পরিবারের কারও কথা শোনেনি সে। ঘটনার আগের দিন সুচিত্রাদেবীকে বিরক্ত করা নিয়ে দুই পরিবারের বচসাও বাধে। এ দিন শিখাদেবী বলেন, ‘‘ওই দিন নবান্ন ছিল। সবাই ঘরে বসেছিলাম। সন্ধ্যেবেলায় বৌদিকে বিরক্ত করার প্রতিবাদ করেছিলেন আমার স্বামী। তখনই রামদা দিয়ে স্বামীর মাথায় এলোপাথাড়ি কোপ মারে দীপঙ্কর। আমরা ঘর থেকে বেরিয়ে আসতেই ও পাশের জমি দিয়ে ছুটে পালায়।’’
ঘটনার সময় সপ্তম শ্রেণিতে পড়তেন নিহতের ছেলে। এখন তিনি রাজ্য পুলিশে কর্মরত। ২০০৭ সালের ৪ জানুয়ারি অভিযুক্ত, কাটোয়া কলেজের শিক্ষাকর্মী দীপঙ্কর ঘোষের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় খুনের চার্জশিট দেয় কাটোয়া থানার পুলিশ।
এ দিন সরকারি পক্ষের আইনজীবী তাপসকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মৃতের স্ত্রী, বাবা-সহ মোট ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।’’ ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্তের ব্যবহৃত একটি চাদর, জুতো পাওয়া যায়। খুনে ব্যবহৃত রামদাটিও পরবর্তীকালে পাশের একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। শিখাদেবী বলেন, ‘‘টানা ১৪ বছরের লড়ার পরে সুবিচার পেলাম।’’