স্ত্রীকে খুনে যাবজ্জীবন যুবকের, জেল শাশুড়িরও

মন্তেশ্বর থানায় লিখিত অভিযোগে দেনুর গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলার মা সন্তোষী মণ্ডল জানিয়েছিলেন, মেয়ে অঞ্জুর সঙ্গে ২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল বিয়ে হয় কসা গ্রামের কৃষ্ণলাল রজকের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৯ ০০:১৩
Share:

দোষী যুবক। নিজস্ব চিত্র

স্ত্রীকে নৃশংস ভাবে খুনের দায়ে যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল কালনা আদালত। সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ছ’মাস কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মৃত বধূর শাশুড়িকেও তিন বছরের কারাদন্ড এবং হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষণা করেন অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক তপনকুমার মণ্ডল।

Advertisement

মন্তেশ্বর থানায় লিখিত অভিযোগে দেনুর গ্রামের বাসিন্দা ওই মহিলার মা সন্তোষী মণ্ডল জানিয়েছিলেন, মেয়ে অঞ্জুর সঙ্গে ২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল বিয়ে হয় কসা গ্রামের কৃষ্ণলাল রজকের। প্রেমের বিয়ে মানেননি শাশুড়ি। বিয়ের পর থেকেই অঞ্জুকে অত্যাচার করে হত বলে অভিযোগ। মাস চারেকের মধ্যেই খুন হন তিনি। পুলিশ জানায়, ওই বছরের ২০ অগস্ট স্ত্রীকে সাইকেলে চাপিয়ে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে এসেছিল কৃষ্ণলাল। রাতে খাওয়াদাওয়ার পরে শুতে যায় দম্পতি। সন্তোষীদেবীর দাবি, রাত ১টা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে বাইরে গিয়েছিল মেয়ে-জামাই। কিছুক্ষণ পরে ফিরে আসে। আবার ২টো নাগাদ বেরিয়ে যায়। তাঁর দাবি, বাড়িতে শৌচাগার না থাকায় বাইরে বেরনো নিয়ে সন্দেহ হয়নি তাঁর। তবে দীর্ঘক্ষণ না ফেরায় খোঁজ শুরু হয়। তিন দিন পরে বাড়ির কাছাকাছি দিঘিতে ভেসে ওঠে অঞ্জুর দেহ।

অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কৃষ্ণলাল এবং তার মা বেলু রজককে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, জেরায় কৃষ্ণলাল খুনের কথা স্বীকার করে। সে জানায়, খুন করে প্রমাণ লোপটের জন্য দিঘিতে স্ত্রীর দেহ ফেলে দিয়েছিল সে। ঘটনার পুনর্নিমাণেও সে তা দেখায়। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ফরেন্সিক বিষেশজ্ঞরা রিপোর্ট দেন, শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল ওই মহিলাকে। মামলা চলাকালীন তদন্তকারী অফিসার, চিকিৎসক-সহ ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। বুধবার ওই দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।

Advertisement

বৃহস্পতিবার আদালতে দাঁড়িয়ে কৃষ্ণলাল জানায়, সে সংসারে একমাত্র রোজগেরে। তাকে ক্ষমা করা হোক। সরকারি আইনজীবী বিকাশ রায় জানান, বিয়ের অল্প দিনের মাথায় পরিকল্পনা করে স্ত্রীকে খুন বিরলতম ঘটনা। দোষীকে সর্বোচ্চ সাজা দিক আদালত। রায় দিতে গিয়ে বিচারক জানান, অঞ্জু ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। তার বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে পারেনি ধৃত। এটা ঠান্ডা মাথায় খুন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement