ঘরছাড়াদের ফেরাতে গিয়ে বিমান ক্ষোভের মুখে

নিচুতলার ক্ষোভ প্রশমিত করে তাঁদের চাঙ্গা করতে শেষমেশ পথে নেমেছেন আলিমুদ্দিনের নেতারা। কিন্তু বর্ধমানে হাটগোবিন্দপুরে ঘরছাড়াদের ফেরাতে গিয়ে তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়ে শেষে রণে ভঙ্গ দিতে হল বিমান বসুদের। আজ, মঙ্গলবার আবার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের নেতৃত্বে বীরভূমের লাভপুরে যাচ্ছে বামফ্রন্টের আর একটি প্রতিনিধি দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৪ ০৩:১৩
Share:

হাটগোবিন্দপুরে ঘরছাড়াদের পরিবারের সঙ্গে বাম প্রতিনিধি দল। ছবি: উদিত সিংহ

নিচুতলার ক্ষোভ প্রশমিত করে তাঁদের চাঙ্গা করতে শেষমেশ পথে নেমেছেন আলিমুদ্দিনের নেতারা। কিন্তু বর্ধমানে হাটগোবিন্দপুরে ঘরছাড়াদের ফেরাতে গিয়ে তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে পড়ে শেষে রণে ভঙ্গ দিতে হল বিমান বসুদের। আজ, মঙ্গলবার আবার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের নেতৃত্বে বীরভূমের লাভপুরে যাচ্ছে বামফ্রন্টের আর একটি প্রতিনিধি দল।

Advertisement

সোমবার প্রায় দেড় কিলোমিটার মিছিল করে হাটগোবিন্দপুরে যাওয়ার কথা ছিল বাম নেতাদের। বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমানবাবু ছাড়াও ছিলেন সিপিএমের রবীন দেব, মদন ঘোষ, অমল হালদার, আরএসপির মনোজ ভট্টাচার্য, সিপিআইয়ের মঞ্জুকুমার মজুমদার, ফরওয়ার্ড ব্লকের নরেন চট্টোপাধ্যায়েরা। তাঁরা গাড়িতে গ্রামের বাজারে পৌঁছেন। কিন্তু যে পাড়াতেই ঢুকেছেন, তাঁদের কালো পতাকা দেখানো হয়। শেষে, মিনিট ৪৫ পরে পুলিশই তাঁদের গ্রাম থেকে বের করে গাড়িতে তুলে দেয়।

লোকসভা ভোটের আগে, গত ২৬ এপ্রিল হাটগোবিন্দপুরে স্থানীয় তৃণমূল নেতা অমিতাভ পাঁজা খুনের পরে পাল্টা হামলায় ঘরছাড়া হয় বেশ কিছু সিপিএম সমর্থক পরিবার। বিমানবাবুর অভিযোগ, “দেড়শো মহিলা-সহ ৪৮০ জন ঘরছাড়া। তাঁদের ঘরে ফেরাতে জেলা পুলিশ-প্রশাসনের কাছে আবেদন করলেও লাভ হয়নি।” এ দিন কী হল? বিমানবাবু বলেন, “তৃণমূলের লোকেরা বিশৃঙ্খলা তৈরি করায় আমাদের পক্ষে গ্রাম ছাড়াদের ঘরে ফেরানো সম্ভব হয়নি।”

Advertisement

পরে সিপিএমের বর্ধমান জেলা দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে বিমানবাবু অভিযোগ করেন, “হাটগোবিন্দপুরে আমাদের ১৪৫৬ জনের ১৭৮০ বিঘা জমির বোরো ধান কেটে নেওয়া হয়েছে। সেখানে এখন তৃণমূল আমন চাষ করছে। প্রায় হাজার বিঘার ফসল নষ্ট করেছে। অনর্থক মামলায় জড়ানো হয়েছে ২৬১৫ জনকে। জেল খাটছেন ২৩ জন। প্রায় চারশো বাড়ি ও দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে।” ঘরছাড়াদের ফেরাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার এসপিদের নির্দেশ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন জানিয়ে তাঁর কটাক্ষ, “উনি কী নির্দেশ দিয়েছিলেন, জানি না। তবে ঘরছাড়াদের ফেরাতে পারেননি। সংখ্যাটা বরং বেড়েছে।”

বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা অবশ্য দাবি করেন, “ওখানে যাঁরা গ্রেফতারি এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাঁরাই গ্রামছাড়া রয়েছেন।” পুলিশ থাকা সত্ত্বেও বাম নেতারা বিক্ষোভের মুখে পড়লেন কী করে? মির্জার দাবি, “ওঁদের সঙ্গে তিন জন ডিএসপি এবং এসডিপিও স্তরের অফিসার-সহ ৪০ জনের বাহিনী ছিল। গ্রামের লোকেরা কিছুটা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, স্লোগান দিয়েছেন বটে। কিন্তু তাঁদের নেতাদের কাছাকাছি আসতে দেওয়া হয়নি।” রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা (গ্রামীণ) সভাপতি স্বপন দেবনাথের প্রতিক্রিয়া, “অমিতাভ পাঁজা খুনে জড়িতদের অনেককেই পুলিশ এখনও ধরতে পারেনি। তাই ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। বিমানবাবুরা মস্ত নাটক করেছেন!”

কলকাতায় সরকারি কর্মচারী সংগঠনের সভায় সূর্যবাবু বলেন, “কাল লাভপুর যাচ্ছি। যত বাধাই আসুক, আমরা লাভপুরে ঢুকবই!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement