মন্তেশ্বর উপনির্বাচন

স্ক্রুটিনি বয়কট বামেদের, গণনায় নেই কংগ্রেস

বুথে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনি না থাকা, বিরোধী এজেন্ট-সমর্থকদের হুমকি এবং অবাধে ভোট প্রক্রিয়া না হওয়ার অভিযোগে ভোটের দিনই প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করেছিলেন কংগ্রেসের বুলবুল আহমেদ শেখ। সরব হয়েছিল বিরোধী সিপিএম ও বিজেপিও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share:

কালনা কলেজের গণনাকেন্দ্রের বাইরে কড়া পাহারা। নিজস্ব চিত্র।

বুথে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনি না থাকা, বিরোধী এজেন্ট-সমর্থকদের হুমকি এবং অবাধে ভোট প্রক্রিয়া না হওয়ার অভিযোগে ভোটের দিনই প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করেছিলেন কংগ্রেসের বুলবুল আহমেদ শেখ। সরব হয়েছিল বিরোধী সিপিএম ও বিজেপিও। এ বার সেই একই অভিযোগে ২২ নভেম্বর, গণনাকেন্দ্রে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেস। রবিবার স্ক্রুটিনি পর্ব বয়কট করেছে সিপিএমও।

Advertisement

মন্তেশ্বরের বিধায়ক সজল পাঁজার অকালমৃত্যুর পরে এই কেন্দ্রে উপনির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরে থেকেই শাসকদলের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযোগ করেছিল বিরোধীরা। এমনকী মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিনেও সিপিএম প্রার্থী ওসমান গণি সরকার সন্ত্রাসের অভিযোগ করেন। উল্টো দিকে, কান ঘেঁষে জেতা মন্তেশ্বর কেন্দ্রে (গতবারের ব্যবধান মাত্র ৭০৬ ভোটের) ব্যবধান বাড়াতে প্রচারে গেরস্থের উঠোন বা হেঁসেলে ঢুকে পড়ার কৌশল নেয় শাসকদল। বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ১৭টি পঞ্চায়েতের দায়িত্ব দেওয়া হয় শাসকদলের তাবড় নেতা-বিধায়কদের। নামানো হয় তৃণমূল ঘনিষ্ঠ গ্রামীণ চিকিৎসক, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বা প্রাণিবন্ধুর মতো নানা পেশার লোক জনকেও। রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রচার পর্বেই শাসকদলের তুলনায় বেশ খানিকটা ব্যাকফুটে চলে যায় বিরধীরা। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে অভিযোগের সংখ্যা।

শনিবার, ভোটের দিন দুপুর ৪টে নাগাদ ভোট লুঠের অভিযোগ তুলে কংগ্রেসের বুলবুল আহমেদ শেখ প্রার্থিপদ প্রত্যাহারের কথা জানান। সেই মর্মে নির্বাচনী পর্যবেক্ষকের মোবাইলে মেসেজও পাঠান। বুলবুলের অভিযোগ, ‘‘ভোট লুঠের প্রতিবাদ করতে গেলে এক জায়গায় তৃণমূলের লোক জন খুনেরও হুমকি দেয়।’’ যদিও নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়ে দেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে ছাড়া এ ভাবে প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করা যায় না। সেই ‘নিয়ম’ জানেন দাবি করেই রবিবার বুলবুল বলেন, ‘‘ভোট নিয়ে আমাদের এখন আর কোনও আগ্রহ নেই। মানুষ নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। তাই আমরা গণনাকেন্দ্রে থাকছি না।’’

Advertisement

ভোটের দিন, বুথ দখল, ছাপ্পা, এজেন্টদের ফর্ম কেড়ে নেওয়া-সহ বিভিন্ন অভিযোগ করেন সিপিএম নেতৃত্বও। সিপিএম প্রার্থী ওসমান গণি সরকার রবিবার বলেন, ‘‘ভোট লুঠের প্রতিবাদ করেই স্ক্রুটিনি পর্বে আমরা যোগ দিইনি।’’ তবে গণনাকেন্দ্রে থাকা-না থাকার বিষয়টি নিয়ে এখনও দলে সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।

উল্টো দিকে ভোটের দিন সন্ত্রাসের নালিশ করলেও বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ পোদ্দার রবিবার বলেন, ‘‘ভোটকে প্রহসনে পরিণত করেছে তৃণমূল ও তার প্রশাসন। এরপরেও আমরা গণনাকেন্দ্রে থাকছি। তবে গণনাকেন্দ্রে থাকা আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছি। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসেরও আশঙ্কা রয়েছে।’’

যদিও বিরোধীদের এ সব অভিযোগ, দাবিকে একেবারেই আমল দিতে নারাজ শাসকদল। তৃণমূলের তরফে গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ রবিবার বলেছেন, ‘‘কোথাও কোনও গোলমাল হয়নি। দিনভর ভাল ভাবে ভোট হয়েছে। ভোটের শেষ দিকে প্রার্থিপদ প্রত্যাহারের ঘোষণা করে কংগ্রেস নাটক করছে। বিরোধীরা আরও নাটক করবে।’’

বিরোধীরা প্রশ্ন তুললেও রবিবার মহকুমা প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়, ২২ নভেম্বর কালনা কলেজে ভোট গণনাকেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement