দুর্গাপুরের বিজড়া হাই স্কুলে আনাজের বাগান। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্মূল্যের বাজারে দুর্গাপুরের একাধিক স্কুলের মিড-ডে মিলে ভরসা জোগাচ্ছে আনাজ বাগান বা ‘কিচেন গার্ডেন’। মিড ডে মিলের জন্য হাই স্কুলে ছাত্র পিছু বরাদ্দ ১০০ গ্রাম চাল ও ৮.১৭ টাকা। ডিম, আনাজ সবেরই বাজার অগ্নিমূল্য। এই পরিস্থিতিতে সহায় হয়েছে স্কুলের বাগানের আনাজ। কোনও কোনও দিন আনাজ কিনতেও হচ্ছে না। কখনও কম কিনলে কাজ চলে যাচ্ছে বলে একাধিক স্কুলের তরফে জানা গিয়েছে।
দুর্গাপুরের বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, পড়ুয়ারা শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে আনাজ বাগান গড়ে তুলেছে স্কুলে। হরেক রকমের আনাজের চাষ হচ্ছে। সেই আনাজ মিড-ডে মিলে পড়ুয়াদের পাতে তুলে দিচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। বাগান ঘুরে দেখা গেল, সেখানে ফলেছে বিভিন্ন ধরণের শাক, বেগুন, লাউ, কুমড়ো, ঢ্যাঁড়শ, ঝিঙে, টম্যাটো, উচ্ছে, পেঁপে সহ নানা রকম আনাজ। প্রতিদিন প্রয়োজন মতো আনাজ তোলা হচ্ছে মিড-ডে মিলের জন্য। কয়েক বছর ধরেই ওই স্কুলগুলিতে এমন বাগান করে চলেছে স্কুলের পড়ুয়ারা। নিজেদের হাতে তৈরি আনাজ মিড-ডে মিলের পাতে দেখে খুশি পড়ুয়ারাও।
যেমন, বিজড়া হাই স্কুলে অনেকটা জায়গা জুড়ে রয়েছে আনাজের
বাগান। সাধারণ আনাজ ছাড়াও আম, কাঁঠাল, লেবু গাছ লাগানো হয়েছে। ফলে মিড ডে মিলে মরসুমের সময় আমের চাটনি, ইঁচড়ের তরকারিও থাকে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কাজি নিজামুদ্দিন জানান, স্কুলের ফাঁকা
জমি কাজে লাগাতে ২০১৩ সালে প্রথম ‘কিচেন গার্ডেন’ গড়ে তোলা হয়। তিনি বলেন, “তখন থেকে পড়ুয়াদের পাতে টাটকা আনাজ তুলে দিতে কোনও অসুবিধা হয় না। বিশেষ করে বাজার যখন চড়া থাকে তখন খুবই সুবিধা হয়। স্কুলের পড়ুয়ারাও অবসর সময়ে বাগানের কাজে লেগে যায়। গাছপালা, প্রকৃতির সঙ্গে ওদের নৈকট্য বাড়ে।”
করোনা অতিমারির পরে নতুন করে সেজেছে জেমুয়া ভাদুবালা বিদ্যাপীঠ। গড়ে ওঠে ‘কিচেন গার্ডেন’। প্রধান শিক্ষক জইনুল হকের কথায়, “আনাজের বাগান থাকায় মিড ডে মিলের খরচে ৩০-৩২ শতাংশ সাশ্রয় হচ্ছে। এতে মিড ডে মিলের গুণমান বাড়াতে সুবিধে হচ্ছে।”
লেবাবহাটের নেপালি পাড়া হিন্দি হাই স্কুলের ছাদে আনাজ বাগান তৈরি করা হয়েছে। এখন সেই বাগানে প্রচুর বেগুন ও ঢেঁড়শ ফলছে। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটিতে ফাঁকা জায়গার অভাব। তাই বাগানের জন্য ছাদকে বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক কলিমুল হক জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে বাগান তৈরির পর থেকেই নিয়মিত আনাজ মিলছে। সরকারি স্তরে এই বাগান প্রশংসিত হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। শিশু সংসদের সদস্যদের নিয়ে বাগান দেখাশোনা করেন শিক্ষিকা অপর্ণা মণ্ডল। এছাড়া ‘হাইড্রোপনিক্স’ পদ্ধতিতে অর্থাৎ মাটি ছাড়াও আনাজ উৎপাদন করা হয় বলে জানান প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘‘আনাজের দাম চড়া। ছাদ বাগান থাকায় অনেকটা সুবিধা হয়।