জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে সাংসদ। —নিজস্ব চিত্র।
ভোটের প্রচারে বেরিয়ে বর্ধমানের তেজগঞ্জ, গলসির ভাসাপুলে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের নীচে আন্ডারপাস নির্মাণের দাবি শুনেছিলেন কীর্তি আজাদ। সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পরে তিনি সে বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন। সোমবার দুর্গাপুর সার্কিট হাউসে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের (এনএইচএআই) সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। ঠিক হয়েছে, এনএইচএআই এবং প্রশাসনের তরফে ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে যৌথ পরিদর্শন হবে। এ ছাড়াও, জাতীয় সড়কের বেহাল সার্ভিস রোড দ্রুত সংস্কারের বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয় বলে জানান কীর্তি।
বর্ধমানের তেজগঞ্জ এলাকার বাসিন্দাদের অনেকের অভিযোগ, জাতীয় সড়কের দু’পাশে চালকল এবং বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৩০-৪০ হাজার মানুষের বসতি থাকলেও, আন্ডারপাস তৈরি করা হয়নি। ভাসাপুলে আন্ডারপাস না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় সিমাসিমি, কাশীপুর, শিড়রাই, পোতনা, খুরাজ-সহ বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের। জাতীয় সড়ক ৬ লেন হওয়ার পরে আন্ডারপাস না হলে তাঁদের এক কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যাতায়াত করতে হবে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। দুই জায়গাতেই আন্ডারপাসের দাবিতে নানা সময়ে আন্দোলন হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনের সময়ে কীর্তি প্রচারে গেলে, দুই জায়গাতেই তাঁকে সমস্যার কথা বলেছিলেন এলাকাবাসী। কীর্তি আশ্বাস দিয়েছিলেন, সাংসদ হওয়ার পরে তিনি এ বিষয়ে তৎপর হবেন। সোমবার তিনি এনএইচএআইয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। ছিলেন এসবিএসটিসির চেয়ারম্যান সুভাষ মণ্ডল, ‘বর্ধমান চিলড্রেন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’র উৎপল দত্ত প্রমুখ।
উৎপল জানান, ২০০৪ সালে জাতীয় সড়কের কাজ হয়। তেজগঞ্জ থেকে প্রায় ৮০০ মিটার দূরে আন্ডারপাস তৈরি করা হয়। তেজগঞ্জ মোড়ের দু’দিকে ৫-৬টি গ্রাম রয়েছে। প্রায় ৩০-৪০ হাজার মানুষের বাস। তাঁদের সঙ্গে কোনও কথা না বলেই পরিকল্পনা করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘তখন থেকে আমরা আন্ডারপাস নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছি। রাষ্ট্রপতির দফতর থেকে শুরু করে নানা জায়গায় আমরা সমস্যার কথা লিখিত ভাবে জানিয়েছি।’’ এ দিন বৈঠকের পরে সাংসদ জানান, এনএইচএআই এবং প্রশাসনের তরফে ইঞ্জিনিয়ারেরা গিয়ে যৌথ ভাবে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন। তিনি বলেন, ‘‘তেজগঞ্জের বাসিন্দারা বহু দিন ধরে আন্ডারপাসের দাবিতে আন্দোলন করছেন। বিশদ প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির পরে কাজ শুরুর সময়ে তখন কেউ আপত্তি জানাননি। বর্ধমান-দুর্গাপুরের মানুষ আমায় সাংসদ নির্বাচন করেছেন। তাই তাঁদের সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয়েছি। এএইচএআইয়ের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ২০ জুলাইয়ের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছি।’’
সাংসদ জানান, জাতীয় সড়কের সার্ভিস রোড বহু জায়গায় বেহাল হয়ে রয়েছে। ডিভিসি মোড়ের আন্ডারপাসে জল জমে থাকে, রাতে অন্ধকারে ডুবে থাকে। এই বিষয়গুলিও জানানো হয়েছে। বৈঠকে হাজির থাকা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের এক প্রতিনিধি বলেন, ‘‘সাংসদের নানা প্রশ্ন ছিল। আমরা সেগুলির উত্তর দিয়েছি। উনি তা লিপিবদ্ধ করেছেন। বৈঠকে যে যে বিষয় উঠে এসেছে, সেগুলি নিয়ে দ্রুত পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’