পূর্বস্থলীর বাঁশদহ বিলে নৌকাবিহার। নিজস্ব চিত্র
দেশি প্রজাতির নানা চুনো মাছ বাঁচাতে খাল-বিল রক্ষার ডাক দিয়ে উৎসব শুরু করেছিলেন প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। ২১ বছরে পা দেওয়া সেই উৎসব শুরু হয়েছে শনিবার। এ বার চুনো মাছ ছাড়াও, শীতের মরসুমে হারানো পিঠে-পুলির স্বাদ ফেরানোর চেষ্টা করেছেন উদ্যোক্তারা। হাল ফিরেছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর বাঁশদহ বিলেরও।
বিল সংস্কার, পাশ দিয়ে রাস্তা তৈরি, আলোর ব্যবস্থা, পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে গত এক দশকে। এ বার বিলের দু’পাশ এবং জলাশয়ের মাঝে তৈরি করা হয় মঞ্চ। নৌকা দিয়ে তৈরি মঞ্চে ভোর থেকেই বিলে ভেসে ভেসে পল্লিগীতি, লোকগীতি, ভাটিয়ালি, বাউলগান শোনাতে শুরু করেন শিল্পীরা। এসেছিলেন অভিনেত্রী জুন মালিয়া, জেলা পরিষদের সভাপতি শম্পা ধাড়া, সহ সভাধিপতি দেবু টুডু, কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ, পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক স্বপন দেবনাথ। অতিথিদের শাপলা ফুল ও মাটির পাত্র ভরা খেজুর গুড় দিয়ে বরণ করা হয়। জুন বলেন, ‘‘দুর্দান্ত পরিবেশে মেলা হয়। বড়দিনে এখানকার মানুষ সত্যিই বড় উপহার পান।’’
উৎসবে আসা মানুষজন যাতে শীতে নানা পিঠের স্বাদ পান, সে জন্য বিলের পাড়েই গরম গরম পিঠে-পুলি তৈরি করেছিলেন কয়েকজন। রয়েছে জীব বৈচিত্র্য, প্রাণিসম্পদ, মৎস্য দফতরের স্টলও। বসেছে মেলাও। জলাশয়কে বাঁচানোর দাবিতে নানা পোস্টারও টাঙানো হয়েছে। এ দিন ৯১ জন মৎস্যজীবীর হাতে তুলে দেওয়া হয় চারাপোনা। বিলের জলেও ছাড়া হয় মাছ। উদ্যোক্তাদের দাবি, রবিবার ২৯টি গোষ্ঠীকে হাঁস, মুরগির ছানা, ১৩টি গোষ্ঠীকে ২১টি করে ছাগল এবং বেশ কিছু মানুষকে বাছুর দেওয়া হবে।
বিলের গা ঘেঁষে মঞ্চে অতিথিদের জন্য ছিল মধ্যহ্নভোজের ব্যবস্থা। মেনুতে ছিল, ভাত, ডাল, ধনেপাতা বাটা, বেগুনপোড়া, মৌরলা, খয়রা, বেলে-সহ ১২ রকমের চুনো মাছের পদ ও বিল থেকে ধরা কাতলা মাছের কালিয়া, চাটনি এবং নলেন গুড়ের পায়েস। নৌকায় বিলে ঘোরার ব্যবস্থাও ছিল। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘ধীরে ধীরে বিল সেজে উঠেছে। পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে বিলকে সাজিয়ে তোলার আরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। ব্যস্ততা থেকে সরে বাঁশদহ বিলে এলে পর্যটকরদের মন
ভরে যাবে।’’