Kazi nazrul University

টাকা খরচ নিয়ে ফোরামের নালিশ ওড়াল বিশ্ববিদ্যালয়

ফোরাম এ-ও দাবি করেছে, এই খরচ সম্পূর্ণ ভাবে অনৈতিক ও অপচয়। পড়ুয়াদের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি বাবদ সংগৃহীত অর্থ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের খাতে পাওয়া তহবিল থেকে এই টাকা খরচ করা হয়েছে।

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:০৩
Share:

কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। Sourced by the ABP

কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে অর্থ খরচ করার অভিযোগ করল ‘পশ্চিমবঙ্গ এডুকেশনিস্ট ফোরাম’ নামে একটি সংগঠন। ফোরামের তরফে ঘটনার তদন্ত দাবি করে রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখাকেও চিঠি পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ মানেননি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ফোরাম যে অর্থ খরচের কথা বলেছে, সেটিকে ‘অন্যায্য’ হিসাবে উল্লেখ করেছে তৃণমূল অনুমোদিত কলেজ শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-ও।

Advertisement

ফোরামের তরফে কলেজ শিক্ষক ওমপ্রকাশ মিশ্র, রঞ্জন চক্রবর্তী ও দেবকুমার মুখোপাধ্যায় একটি বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছেন, চলতি বছরের গত ১৬ মে থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে প্রায় সাড়ে ৩০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। ফোরামের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সরকারি ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা অন্য প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এ সবেরই বিস্তারিত বিবরণ রাজ্য সরকারের দুর্নীতি দমন শাখাকে দিয়ে, তদন্ত দাবি করা হয়েছে বলে ফোরামের দাবি।

ফোরাম এ-ও দাবি করেছে, এই খরচ সম্পূর্ণ ভাবে অনৈতিক ও অপচয়। পড়ুয়াদের কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি বাবদ সংগৃহীত অর্থ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের খাতে পাওয়া তহবিল থেকে এই টাকা খরচ করা হয়েছে। এর ফলে বিশ্বিদ্যালয়ের উন্নয়ন থমকে যেতে বসেছে। ফোরামের অন্যতম সদস্য তথা বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাক্তন উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী বলেন, “বিভিন্ন মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আইনি সহায়তা ও পরামর্শ পেতে গত আট মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ওই অঙ্কের টাকা খরচ করা হয়েছে। অথচ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে, আইনি সহায়তা বাবদ সর্বোচ্চ ২০ লক্ষ টাকা খরচ বরাদ্দ করা আছে। বাড়তি টাকা খরচের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ফিনান্স কমিটি ও রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হয়। এই অনুমতি নেওয়া হয়নি।”

Advertisement

অভিযোগ প্রসঙ্গে উপাচার্য দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে অর্থ খরচের অভিযোগ ঠিক নয়।” কারও নাম না করে তাঁর সংযোজন: “মামলার প্রেক্ষিতে আইনি সহায়তা ও পরামর্শ পেতে যে অর্থ খরচ হয়েছে, তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রাক্তন উপাচার্যের করা মামলার প্রেক্ষিতেই করা হয়েছে। এতে আমাদের কিছু করার নেই।”

তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে এত টাকা আইনি লড়াইয়ের জন্য খরচ করাটাকে ‘খুবই অনৈতিক কাজ’ বলে দাবি করেছেন তৃণমূল অনুমোদিত কলেজ শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার পশ্চিম বর্ধমান জেলা আহ্বায়ক বীরু রজক। তাঁর কথায়, “প্রাক্তন উপাচার্যের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হাই কোর্টে না গেলে, এত লক্ষ টাকা খরচ হত না। তাঁরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে পারতেন। আইনি লড়াই প্রয়োজন হলে, তা সরকার করত। বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকা অপচয় হত না।”

ঘটনাচক্রে, আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস তাঁকে অপসারণের পরে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী হাই কোর্টে প্রথমে একটি মামলা করেন। এর পরে আরও কয়েকটি মামলা ও পাল্টা মামলা হয় সাধন চক্রবর্তী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে। সেই মামলার খরচের জন্যই গত আট মাসে প্রায় সাড়ে তিরিশ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement