বিদ্যাচর্চা ভবনে তৈরি সংগ্রহশালা। নিজস্ব চিত্র।
লক্ষ্য, আগামী প্রজন্মকে আসানসোল শহর ও আশপাশের নানা এলাকার ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য ও সামগ্রীগুলি সম্পর্কে সচেতন করে তোলা। সে দিকে তাকিয়ে বেশ কিছু ঐতিহাসিক নমুনা নিয়ে ‘সেতুবন্ধ’ নামে একটি সংগ্রহশালা তৈরি করেছে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। যৌথ উদ্যোগে রয়েছে, ‘আসানসোল হেরিটেজ গ্রুপ’ নামে একটি সংগঠন।
সংগ্রহশালার কিউরেটর, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির বিভাগীয় প্রধান শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘‘সংগ্রহশালাটি আগামী প্রজন্ম এবং গবেষকদের বিভিন্ন ধরনের গবেষণার কাজে উৎসাহ জোগাবে।’’
কী-কী থাকছে সংগ্রহশালায়? আসানসোল মূলত রেল-শহর। রানিগঞ্জে প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের কয়লা খনি তৈরি হওয়ার পরে, ১৮৫৫-য় কলকাতা-রানিগঞ্জ রেললাইন পাতা হয়। ধীরে-ধীরে গড়ে ওঠে রেল সাহেবদের কলোনি। আসানসোল শহরের গোড়াপত্তনের এ সব নানা ইতিহাস সংক্রান্ত আলোকচিত্র সংগ্রহশালায় রাখা হচ্ছে। পূর্ব রেলের আগের নাম ছিল ‘ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে’। সে সময়ের রেলের টিকিট ছাপানোর যন্ত্র, কেরোসিন তেলের কুপির ‘হাত সিগন্যাল’, ইংরেজ সাহেবদের ব্যবহৃত কিছু আসবাব, পুরনো বাদ্যযন্ত্র, ভগ্নপ্রায় শিল্প-নিদর্শন, পুরনো বই, দলিল-সহ নানা কিছু থাকছে এখানে। পাশাপাশি, ঔপনিবেশিক আমলের স্টেশন, উদ্যান, দ্বারকানাথের কয়লাখনি, ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় স্থান প্রভৃতির আলোকচিত্রও এই সংগ্রহশালায় জায়গা পেয়েছে।
সংগ্রহশালা সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে এমন কিছু প্রাচীন সামগ্রী ও ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যের ছবি রাখা থাকছে, যেগুলি নিয়ে বর্তমান প্রজন্মের সম্যক ধারণা নেই।
শান্তনুবাবু বলেন, ‘‘সময়ের সঙ্গে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। কিন্তু এ সবের গোড়ার কথাগুলোও জানাটা জরুরি। সে লক্ষ্যেই এই সংগ্রহশালা।’’ প্রায় পাঁচ বছরের চেষ্টায়, দু’লক্ষ টাকা খরচে এই সংগ্রহশালাটি তৈরি করা গিয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সংগ্রহশালা বর্তমান প্রজন্ম ও আগ্রহী পড়ুয়াদের পাশাপাশি, গবেষকদের কাজেও বিশেষ ভাবে সাহায্য করবে।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিদ্যাচর্চা ভবনের চতুর্থ তলায় এই সংগ্রহশালাটি তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, পড়ুয়া, গবেষক ছাড়া, অন্য আগ্রহীরাও অনুমতি নিয়ে সংগ্রহশালাটি ব্যবহার করতে পারবেন।