—ফাইল চিত্র।
কখনও ট্রেনে, বাসে কখনও নদীপথে। রাজ্যের অন্য অংশের সঙ্গে তিন ধরনের যোগাযোগ সহজ বলে কাটোয়া ক্রমশ অবৈধ কারবারিদের করিডর হয়ে উঠছে, এমনইটাই বলছেন পুলিশ কর্তারা। কয়েক দিনের মধ্যেই পাচারের সময় কখনও গাঁজা, কখনও হেরোইন আটকেছে পুলিশ। সব ক্ষেত্রেই মহিলারা ওই মাদক নিয়ে ভোরে ভাগীরথী পেরিয়ে নদিয়া হয়ে বাংলাদেশে পাড়ি দিচ্ছিলেন। অথচ বারবার এমন ঘটনার পরেও ঘাটগুলিতে নিরাপত্তারক্ষীদের দেখা মেলে না বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, ব্যবস্থা না নিলে পাচারকারীদের রমরমা বাড়বে।
কাটোয়ায় ভাগীরথীর ঘাটগুলো ঘুরলে দেখা যায় ভোর ৬টা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত যাত্রী পরিবহণ চলে। যাত্রীরা ভারী ব্যাগ, বস্তা নিয়ে নৌকায় ওঠেন। অথচ তাঁদের মালপত্র পরীক্ষা করা তো দূর, সন্দেহভাজন কেউ যাতায়াত করছে কি না সে দিকেও নজরদারি করার মতো কেউ থাকেন না। ফেরিঘাটে নজরদারির জন্য পুরসভা নিযুক্ত চার কর্মী রয়েছেন। তাঁদের দু’জনের দিনে ও দু’জনের সন্ধ্যায় থাকার কথা। কিন্তু অধিকাংশ দিনই দেখা যায়, সকালে এক জন আসেন, তাও আবার বেলা সাড়ে ন’টায় আবার এসেই বারোটার মধ্যেই পাততাড়ি গুটিয়ে পালান, এমনটাই দাবি ইজারাদার বাপি ঘোষের। আর বিকেলের পর তো নিরাপত্তারক্ষীদের দেখাই মেলে না। দাঁইহাটের দেওয়ানগঞ্জ ঘাটে আবার কোনও নজরদারই নেই বলে জানান ইজারাদার রামেশ্বর সরকার। আবার ফেরিঘাট, শাঁখাই ঘাট ও দাঁইহাটের দেওয়ানগঞ্জে দুর্ঘটনা এড়াতে সম্প্রতি চার জন ‘জলসাথী’ নিয়োগ করেছে পরিবহণ দফতর। তাঁরা কেউই স্থানীয় নন। ফলে নিয়োগের পর থেকেই শনি, রবিবার তাঁরা ঘাটে না থেকে বাড়ি চলে যান বলেই দাবি ইজারাদারদের। এ ছাড়াও ফেরিঘাটে তিনটি ও দেওয়ানগঞ্জ ঘাটে চারটি সিসিটিভি থাকলেও শাঁখাই ঘাটে কোনও সিসিটিভিও নেই।
সোমবার ভোরে ছোট লাইনের পাড় থেকে ১৭৮ কেজি গাঁজা-সহ চার মহিলা ও এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। ওড়িশার জাজপুর থেকে ১৩টি বস্তায় ওই গাঁজা এনে কাটোয়ায় ভাগীরথী পেরিয়ে নদিয়া হয়ে বাংলাদেশে পাচারের ছক কষেছিলেন তারা। কিছুদিন আগে ডাউন কামরূপ এক্সপ্রেস থেকেও ৭০০ গ্রাম হেরোইন-সহ দুই মহিলাকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি।
মঙ্গলবার পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি চিন্তার। পুলিশের সঙ্গে নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করব।’’ ধৃত পাচারকারীদের জেরা করে চক্রের খোঁজ চলছে বলে জানান এসডিপিও ত্রিদিব চৌধুরী।