অবস্থানে সাফাইকর্মীরা। ডিপিএল কলোনিতে। নিজস্ব চিত্র।
‘নির্মল সাথী’ তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। প্রায়ই কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। সুপারভাইজারকে জুতো খুলে মারতে যান তাঁর স্বামী। এমন নানা অভিযোগ তুলে দুর্গাপুরের ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের ডিপিএল টাউনশিপে বাড়ি বাড়ি বর্জ্য সংগ্রহের কাজ বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন সাফাইকর্মীদের একাংশ। এর জেরে বিপাকে পড়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। পুরসভা নির্বিকার, এমনও অভিযোগ তুলেছেন সাফাইকর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে প্রাক্তন পুরপ্রতিনিধি-ও। পুরসভা দ্রুত সমস্যা মেটানোর
আশ্বাস দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৫ জন নির্মল বন্ধু ও সাফাইকর্মী রয়েছেন। তাঁরা গত ২৮ ফেব্রুয়ারি পুরসভায় চিঠি দিয়ে নির্মল সাথী স্বস্তিকা সামন্তের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন। তাঁদের অভিযোগ, স্বস্তিকা তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। প্রতিবাদ করলে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। স্বস্তিকার স্বামী অনৈতিক ভাবে তাঁদের উপর খবরদারি করেন। অথচ, তিনি পুরসভার কেউ নন। সুপারভাইজার লক্ষ্মীনারায়ণ গড়াইয়ের অভিযোগ, “স্বস্তিকা তাঁর স্বামীকে দিয়ে আমাকে জুতো খুলে মারার ব্যবস্থা করেছিলেন। গালিগালাজ করা হয়। পুরসভায় জানানো হলেও কাজ হয়নি। সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।” তিনি জানান, তাই প্রতিবাদ জানাতে পাঁচ দিন ধরে বর্জ্য সংগ্রহের কাজ বন্ধ রেখেছেন সাফাইকর্মীরা। সাফাইকর্মী ভোলা ঘোষের দাবি, “আমাদের উপরে মানসিক ভাবে অত্যাচার করা হয়। কেউ অসুস্থ হলেও ছাড় দেওয়া হয় না। দু’বছর ধরে ভুগছি। আমরা দ্রুত ওঁর বদলি চাই।” যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন স্বস্তিকা। তিনি বলেন, “পুরোটাই মিথ্যা অভিযোগ। আমি পুরসভায় সব জানিয়েছি। পুরসভায় আমাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।”
এ দিকে, পরিষেবা বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়েছেন বাসিন্দাদের। তাঁদের বক্তব্য, বাড়িতে, পাড়ায় জমছে বর্জ্যের পাহাড়। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে সাফাইকর্মী সুপর্ণা হালদার বলেন, “যাঁরা অসুবিধায় পড়ছেন, তাঁরা পুরসভার উপরে চাপ দিন। আমাদের অন্যায়ের বিচার চাই। স্বস্তিকা সামন্ত এত সাহস কোথা থেকে পান? পুরসভায় সব জানিয়েও
লাভ হয়নি।”
প্রাক্তন পুরপ্রতিনিধি শশাঙ্কশেখর মণ্ডলের অবশ্য দাবি, “আমি দু’পক্ষকে ডেকে সমস্যা মেটাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু স্বস্তিকা আসেননি। এলাকায় বর্জ্য জমছে। সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়ছেন। পুরসভার উচিত দ্রুত হস্তক্ষেপ করে সমস্যা মিটিয়ে দেওয়া।” প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য ধর্মেন্দ্র যাদব বলেন, “বর্জ্য সাফাই নিয়ে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে একটা সমস্যা হয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”