প্রতীকী ছবি।
ধর্মঘট প্রসঙ্গে আইএনটিটিইউসি এবং বিএমএস-এর অবস্থান নিয়ে আগেই সুর চড়িয়েছিলেন আজ, বুধবার সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া শ্রমিক নেতৃত্ব। ধর্মঘটের ২৪ ঘণ্টা আগে সেই বাদানুবাদের রেশ পৌঁছল জেলাতেও।
মঙ্গলবার ইসিএলের সাঁকতোড়িয়া সদর কার্যালয়ে আয়োজিত বৈঠকে কর্তৃপক্ষ শ্রমিক নেতৃত্বকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতে সাড়া দেননি সিটু, আইএনটিইউসি-সহ অন্য শ্রমিক সংগঠনগুলির নেতারা। তাঁরা অবশ্য জানান, জরুরি পরিষেবাকে ধর্মঘটের আওতা থেকে বাদ রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি, ধর্মঘট সফল করার আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার থেকেই জেলার নানা খনি চত্বরের গেটে ‘পিকেটিং’ করছেন সিটু, আইএনটিইউসি, এইচএমএস-সহ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া সংগঠনগুলির নেতা, কর্মীরা। ইসিএল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, কোলিয়ারি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। কাজে যোগ দিতে ইচ্ছুক শ্রমিকেরা যাতে নির্বিঘ্নে কর্মস্থলে পৌঁছতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
যদিও এই ধর্মঘটে তৃণমূল যে থাকছে না, তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আইএনটিটিইউসি-র খনি শ্রমিকদের সংগঠন কেকেএসসি-র সাধারণ সম্পাদক হরেরাম সিংহ মঙ্গলবার ফের বলেন, ‘‘যে কোনও উপায়ে ধর্মঘট রোখা হবে। কাজে যোগ দিতে ইচ্ছুকদের বাধা দেওয়া হলে মানব না।’’ সেই সঙ্গে হরেরামবাবু এ-ও জানান, প্রতিটি খনিতে তাঁদের সংগঠনের ইউনিটকে ধর্মঘট রোখার নির্দেশ দেওযা হয়েছে। এ দিকে, ধর্মঘটের বিরোধিতা করা হলেও রাস্তায় নামা হবে না বলে জানিয়েছেন বিএমএস নেতা বিনোদ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ধর্মঘটে থাকছি না। এটা আগেই সবাইকে জানানো হয়েছে।’’
এই পরিস্থিতিতে এই দুই সংগঠনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া শ্রমিক সংগঠনগুলি। সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী বলেন, ‘‘বিএমএস-র থেকে বিরোধিতা প্রত্যাশিত। কিন্তু তৃণমূল, ওদের সংগঠন আদতে বিজেপি-রই অন্য রূপ। এনআরসি, সিএএ বাতিলের দাবিতে লোক দেখানো প্রতিবাদ করেছেন। অথচ, ধর্মঘটের মাধ্যমে এই দুই বিষয় বাতিলেরও দাবি জানানো হচ্ছে।’’ হরেরামবাবুর ধর্মঘট ‘না মানা’র কথাকে আসলে ‘ধর্মঘট ভাঙার হুমকি’ হিসেবেই দেখছেন ধর্মঘটের সমর্থকেরা। বংশগোপালবাবু, আইএনটিইউসির কেন্দ্রীয় নেতা চণ্ডী বন্দ্যোপাধ্যায়, এইচএমএস-এর কোলিয়ারি বিভাগের সাধারণ সম্পাদক শিবকান্ত পাণ্ডেরা বলেন, ‘‘কেউ শ্রমিক ও শ্রম বিরোধী পদক্ষেপ করলে, ধর্মঘট ভাঙার চেষ্টা করলে শ্রমিকরাই তা প্রতিহত করবেন।’’