কারখানার বিলগ্নিকরণের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবারই এক যোগে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল সিটু ও আইএনটিইউসি। এ বার আন্দোলনে নামল আইএটিটিইউসি। শুক্রবার দুর্গাপুরের অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টে (এএসপি) বিক্ষোভ দেখাল আইএনটিটিইউসি। বিলগ্নিকরণের বদলে প্রয়োজনে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের সঙ্গে এএসপি-কে মিশিয়ে দেওয়ারও দাবি জানান আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব।
এ দিন সকাল থেকেই কারখানার গেটে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন আইএনটিটিইউসি-র সদস্যরা। সংগঠনের নেতা অশোক কুণ্ডুর দাবি, ইতিমধ্যেই কারখানার বেশ কয়েকটি বিভাগ ডিএসপি-র সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। আইএনটিটিইউসি নেতৃত্বের দাবি, দরকারে গোটা কারখানায় ডিএসপি-র সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হোক। দাবি না মানা হলে প্রয়োজনে কারখানার গেটে লাগাতার অবস্থান-বিক্ষোভ দেখানো হবে বলেও জানান তাঁরা। কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।
এএসপি-তে বিশেষ ধরনের মিশ্র ইস্পাত তৈরি হয়, যা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র, রেলে, বিদ্যুৎকেন্দ্র, অটোমোবাইল শিল্প-সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, লাগাতার লোকসানে চলা কারখানাগুলি আর চালাতে চায় না কেন্দ্রীয় সরকার। এরপরেই এএসপি-র বিলগ্নিকরণ প্রক্রিয়া শুরু হবে আশঙ্কা করে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে লাগাতার বিক্ষোভ-আন্দোলন শুরু করে সিটু। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের একটি প্রকল্পের অধীনে বাতিল আকরিক ব্যবহার করে কী ভাবে ভাল ইস্পাত তৈরি করা যায়, তার জন্য নতুন প্রযুক্তির খোঁজে আইআইটি খড়্গপুরের সঙ্গে চুক্তিও করে এএসপি। কিন্তু সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে লোকসানে চলা কারখানাটির ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার কারখানার আধিকারিকের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ, মিছিল, স্লোগানে দিনভর আন্দোলন কর্মসূচি নেয় সিটু, আইএনটিইউসি। শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি, গত ২৯ নভেম্বর মুম্বই স্টক এক্সচেঞ্জ ও ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডে সেল কর্তৃপক্ষ চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছেন ভদ্রাবতী, সালেমের ইস্পাত কারখানা ও এএসপি কারখানার বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত ক্যাবিনেট কমিটি (ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স) অনুমোদন করেছে। সেই চিঠির প্রতিলিপি হাতে রয়েছে দাবি করেই বৃহস্পতিবার আন্দোলন হয়।
মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আইএটিটিইউসি-র ময়দানে নেমে পড়ার বিষয়টি নিয়ে কারখানার কর্মীদের একাংশের মত, এরপরেও আন্দোলনে না নামলে সাংগঠনিক ভাবে জমি হারানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারত। এ দিন অবশ্য অশোকবাবু বলেন, ‘‘কোনও ভাবেই এএসপি-র বিলগ্নিকরণ মানব না আমরা। কারখানা কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে সেই দাবিও জানানো হয়েছে।’’