অস্থায়ী মঞ্চে মেয়র দিলীপ অগস্তি। নিজস্ব চিত্র
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠান উপলক্ষে মঞ্চ নির্দিষ্ট ছিল। কথা ছিল, সেখানেই সংবর্ধনা জানানো হবে দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তিকে। কিন্তু আয়োজকেরা জানান, স্থানীয় কাউন্সিলর তথা চেয়ারম্যান মৃগেন্দ্রনাথ পালের ‘নিষেধের’ কারণে ওই মঞ্চে অনুষ্ঠান করা যায়নি। এর পরেই প্রকাশ্যেই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরব হন মেয়র। যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চেয়ারম্যান।
দুর্গাপুরের ট্রাঙ্ক রোড এলাকায় থাকা পুরসভার ‘সুকান্ত মঞ্চ’-এ একটি পত্রিকা বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে মেয়রকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে বলে জানান উদ্যোক্তারা। কিন্তু অনুষ্ঠানটি সুকান্ত মঞ্চে না হয়ে পাশের ‘স্ট্রিটে’ একটি ফাঁকা জায়গায় অস্থায়ী মঞ্চ নির্মাণ করে আয়োজিত হয়।
মেয়র সেখানে পৌঁছে এই স্থান-বদলের কারণ জানতে চান। উদ্যোক্তাদের তরফে রাজীব ঘাঁটি বলেন, ‘‘মঙ্গলবার জানানো হয়, সুকান্ত মঞ্চে অনুষ্ঠান করা যাবে না। তাই অস্থায়ী ভাবে ‘আবুল বরকত মঞ্চ’ বানিয়ে অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।’’ তিনি জানান, মেয়র কেন সুকান্ত মঞ্চে অনুষ্ঠান হয়নি তা জানতে চান। তার পরে সেখান থেকে এবং পরে সুকান্ত মঞ্চে গিয়ে সেখান থেকে দু’দফায় মৃগেন্দ্রনাথবাবুকে ফোন করে কেন ওই মঞ্চে অনুষ্ঠান হল না তা জেনে তাঁকে জানাতে বলেন মেয়র।
পুরসভায় ফিরে মেয়র বলেন, ‘‘মঞ্চ কেন ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি জানতে চাইলে আমায় এক জন বলেন, পাঁচমাথার মোড়ে আমাদের দলীয় কার্যালয় থেকে বারণ করা হয়েছে। উদ্যোক্তাদের কয়েকজন বলেন, মৃগেন্দ্রনাথবাবু বারণ করেছেন। তাঁকে ফোনে বলি, এটা ঠিক হয়নি। পুরসভার মঞ্চে মেয়রকে নিয়ে অনুষ্ঠান করা যাবে না, এতে শুধু মেয়র নয়, পুরসভার অপমান। এতে দলের ভাবমূর্তিও নষ্ট হচ্ছে।’’ বিষয়টি দলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারিকেও জানানো হয়েছে দাবি করে মেয়র বলেন, ‘‘এমন ব্যক্তিরা যাতে দলের ক্ষতি না করতে পারেন তা দেখার আর্জি জানিয়েছি।’’ তবে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মৃগেন্দ্রনাথবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। সুকান্ত মঞ্চ সবার জন্য খোলা। ঠিক কী হয়েছে, জানি না। কলকাতায় আছি। মেয়র আসবেন জানলে আমি কলকাতার কর্মসূচি বাতিল করে ফিরে যেতাম।’’
কারণ যা-ই হোক না কেন, বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে ঘটনাটিকে ‘কোন্দল’ হিসেবেই দেখছেন তৃণমূলের স্থানীয় কর্মীদের একাংশ। তবে বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘কোথাও ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। দু’জনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া হবে।’’