জামালপুরে বিজেপির ঝামেলা। ছবি: উদিত সিংহ।
ম্যারাপের ভিতরে বসে রয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধরী। তাঁর সামনেই হাতাহাতিতে জড়ালেন বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশ। জামালপুরে দুই নেতার সঙ্গে তৃণমূলের ‘যোগসাজশ’ থাকার কারণেই এলাকায় বিজেপির ‘উত্থান’ আটকে রয়েছে, অভিযোগ তুললেন কেউ-কেউ। গোলমাল দেখে চেয়ার ছেড়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দলীয় কর্মীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা আপনাদের সঙ্গে কথা বলব।’ এর পরে ‘বিক্ষুব্ধের’ সভাস্থল ছাড়েন। মিনিট পনেরোর মধ্যে ‘শক্তিকেন্দ্র প্রমুখ’দের নিয়ে বৈঠক শেষ করে বেরিয়ে যান মন্ত্রীও।
রবিবার দুপুরে জামালপুরের জৌগ্রামের কাছে দোগাছিয়ায় বিজেপির ‘অর্ন্তদ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে দল। এখানেই সভা করার কথা ছিল বিজেপির জেলা (বর্ধমান পূর্ব) নেতাদের। রায়না থেকে বিকেল ৫টা নাগাদ মন্ত্রী সভাস্থলে আসেন। পৌঁছে যান জেলা (বর্ধমান পূর্ব) সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়। তার পরেই জামালপুরে একটি মণ্ডলের সভাপতি অভিজিৎ ঘোষালের নেতৃত্বে বেশ কয়েক জন রাস্তায় মন্ত্রীর গাড়ির সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের বলতে শোনা যায়, ‘পুরনো নেতা-কর্মীদের চক্রান্ত করে কমিটি থেকে বাদ দিয়েছে। নতুন কমিটির অনেকের সঙ্গে তৃণমূলের যোগ রয়েছে।’
পরে বিক্ষোভকারীরা সভাস্থলে ঢুকতে গেলে কয়েক জন বাধা দেন বলে অভিযোগ। রাস্তার উপরেই বাদানুবাদ শুরু হয়। কয়েক জন সভাস্থলে ঢুকে জামালপুরের দুই বিজেপি নেতার নাম ধরে চিৎকার করতে থাকেন। তাঁদের মঞ্চ থেকে নেমে যেতে বলা হয়। তখনই সভাস্থলের ভিতরে দু’পক্ষের হাতাহাতি বেধে যায় বলে দাবি দলের একাংশের। মন্ত্রী দু’পক্ষকে শান্ত হতে বললেও ফল হয়নি।
‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা অভিজিৎ ঘোষালের দাবি, “২০২১ সালে আমি মণ্ডল সভাপতি ছিলাম। এলাকায় দলকে জিতিয়েছিলাম। তৃণমূলের হাতে মার খেয়েছি, মামলায় ফেঁসেছি। অথচ আমাদের বাদ দিয়ে দিল! পুরনো কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে শুধু নতুনদের নিয়ে সংগঠন হবে? শাসক দলের কাছে পুরনোরা মার খেতেই থাকবে আর ওরা পদ পাবে? আমাদের দাবি দলকে জানাতে এসেছি।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এত দিন আমরা তৃণমূল-বিজেপির যোগাসাজশের কথা বলেছি। এ বার বিজেপির নিচুতলার কর্মীরাও তা বলছেন। মানুষও বুঝতে পারছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “আমরা তো শুনলাম, একশো দিনের কাজের টাকা কেন দেওয়া হচ্ছে না, সে নিয়ে না কি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সামনে বিজেপির নেতা-কর্মীরা হাতাহাতি করেছেন।”
বিজেপির জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “জনগণকে নিয়েই তো দল। সেখানে নানা জনের মান-অভিমান, ভাল-খারাপ থাকবে। তবে যোগসাজশের অভিযোগ ঠিক নয়। ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের নজরে রয়েছে বিষয়টি।’’