তপ্ত: দুর্গাপুরে ভগৎ সিংহ মোড়ে, বুধবার। ছবি: বিকাশ মশান
প্রতি বছর গরমের প্রভাব অনেকটাই বেশি থাকে পশ্চিম বর্ধমান জেলায়। কিন্তু এ বছর এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহেই মে, জুন মাসের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। এমনটাই জানাচ্ছেন জেলার বাসিন্দারা। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত রোদের যা তেজ, তাতে করে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।
দিন দিন যেন চড়ছে তাপমাত্রার পারদ। খুব সকাল সকাল আবহাওয়া একটু ঠান্ডা থাকলেও, সকাল ১০টার পর থেকে তাপমাত্রা বাড়তে থাকছে। বাস থেকে রাস্তাঘাট সবই প্রায় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। দুপুরের দিকে কার্যত ‘লু’ বইছে। এই পরিস্থিতিতে যাঁরা পথে বেরোচ্ছেন, তাঁরা মুখ, হাত ঢেকে বেরোচ্ছেন। আর চিকিৎসকেরাও এই সময়ে খুব প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোতে নিষেধও করছেন। পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়ারও পরামর্শ দিচ্ছেন।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার থেকে জেলায় গরম বেড়েছে। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সকাল ১০টা পর্যন্ত খুব একটা অস্বস্তিকর আবহাওয়া থাকছে না। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদের তেজ বেড়ে যাচ্ছে। তবে রাতের দিকে কিছুটা হলেও আবহাওয়ার উন্নতি হচ্ছে।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর এই সময়ে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে থাকে জেলার তাপমাত্রা। এ বার কিন্তু, তা ৩৮ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গিয়েছে। তার সঙ্গে দুপুরে গরম হাওয়া বইছে। তার প্রভাব পড়ছে জনজীবনেও। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তাঘাট, বাজার ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। আবার বিকেল ৫টার পরে বাজারে মানুষজনের দেখা মিলছে। দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজারের ব্যবসায়ী নরেশ মণ্ডল জানালেন, সামনেই বাংলা নববর্ষ। এই সময়ে সারাদিন ব্যস্ত থাকে বাজার। তবে দুপুরের দিকে বাজার পুরো ফাঁকাই থাকছে।
একই অবস্থা বাসগুলিতেও। বেশির ভাগ বাসেই যাত্রী সংখ্যা হাতে গোনা। দুর্গাপুর শহরের অনেক রুটে দুপুরের দিকে বাস বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন মালিকেরা। দুর্গাপুর মিনিবাস মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অলোক চট্টোপাধ্যায় জানান, খুব প্রয়োজন ছাড়া এই গরমে মানুষ বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন না। তার প্রভাব পড়ছে বাসেও। তিনি বলেন, “এমনিতেই দিনদিন বাসে যাত্রীসংখ্যা কমে যাচ্ছে। তার উপরে এই গরমে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীও থাকছে না।”
এই গরমের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে বিভিন্ন সচেতনতা বার্তা দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) শেখ মহম্মদ ইউনুস বলেন, “এই গরমে সকলকে সচেতন থাকাদরকার। খুব প্রয়োজন ছাড়া রোদে না বেরনোই ভাল।”