কাটোয়ায় বিজেপির প্রতিবাদ মিছিলে দিলীপ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
রাখিবন্ধন কর্মসূচিতে এসেছেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। অথচ, সেখানে দেখাই গেল না দলের সাংগঠনিক কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় বা তাঁর অনুগামীদের। বিষয়টি দলের দুই গোষ্ঠীর ‘দ্বন্দ্বের’ বহিঃপ্রকাশ বলেই মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ।
বিজেপি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে কাটোয়া শহরে আসেন দিলীপ। সোমবার সকাল ৬টা নাগাদ দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কাটোয়া শহরের কাছারি রোড থেকে হেঁটে সার্কাস ময়দান হয়ে কাটোয়া স্টেশনে যান তিনি। সেখানে ‘চায়ে পে চর্চা’ কর্মসূচি সারেন। তার পরে স্টেশন চত্বরে গিয়ে পথচারীদের রাখি পরিয়ে দেন। মহিলাদের হাতে রাখি পরিয়ে নারী নিরাপত্তার দাবি তোলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। আর জি কর মেডিক্যালে তরুণী চিকিৎসক হত্যায় দোষীদের শাস্তির দাবিও তোলেন তিনি।
দুপুরে কাটোয়া নগর মণ্ডলের সভাপতি অমর রামের বাড়িতে খাওয়া দাওয়া সেরে বিশ্রাম নেন দিলীপ। বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ শহরের ঘোষেশ্বরতলা থেকে মিছিল করে কাটোয়া মহকুমা শাসকের কার্যালয়ের সামনে আসেন তিনি। সেখানে পথসভা হয়। এই কর্মসূচিতে কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোট থেকে বিজেপির কর্মীদের আনা হয়েছিল। বিকেলে রাখিবন্ধন অনুষ্ঠানে যোগ দেন দিলীপ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলার প্রাক্তন সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ, যিনি আবার দলীয় সমীকরণে গোপালের ‘বিরোধী’ বলে দলে পরিচিত। মাস খানেক আগেও দাঁইহাট শহরে এসে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন দিলীপ। সেখানেও গোপাল কিংবা তাঁর অনুগামীদের দেখা যায়নি।
কেন গোপালকে দেখা গেল না দিলীপের পাশে? গোপালের বক্তব্য, “দলের পূর্ব কর্মসূচি থাকায় আমি কালনায় ছিলাম। ওটা (কাটোয়ার অনুষ্ঠান) পার্টির কোনও কর্মসূচি ছিল না বলে অনেকেই যাননি।’’ আর দিলীপের মন্তব্য, “কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আমি কাটোয়ায় আসিনি। আর জি করের ঘটনার বিচার চাইতে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো আমিও পথে নেমেছি। এই খবর পেয়েই হয়তো হাজার হাজার কর্মী আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। আমি দলীয় কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞ।”
আর জি করের ঘটনা প্রসঙ্গে দিলীপের অভিযোগ, ‘‘পুলিশকে দিয়ে রাতারাতি প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিল (তৃণমূল)। অথচ, নাটক করতে মুখ্যমন্ত্রী দোষীর ফাঁসির দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন। তাঁর দলের নেতারাও নাটক করছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজেই নিজের বিরুদ্ধে লোক দেখানো আন্দোলন করছেন দেখে মানুষজন ধৈর্য হারিয়ে ফেলেছেন।’’ এ নিয়ে বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “আমরাও চাই আর জি কর-কাণ্ডে প্রকৃত দোষীর কঠোরতম সাজা হোক। কিন্তু, বিজেপি-সহ সমস্ত বিরোধীরা প্রথম থেকেই নোংরা রাজনীতি করতে নেমেছে। এ দিন দিলীপ ঘোষ কাটোয়ায় এসে উস্কানিমূলক কথা বলে অশান্তি করতে চাইছেন।”
এ প্রসঙ্গে বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতির বক্তব্য, ‘‘দিলীপদা সিনিয়র লিডার হিসেবে কাটোয়ায় এসে কী কথা বলে গিয়েছেন, তা তিনিই ভাল
বলতে পারবেন।”