আলোচনাসভায় জেলাশাসক। —নিজস্ব চিত্র।
কেউ তুললেন অসহযোগিতার নালিশ। কারও ক্ষোভ স্থানীয় নানা সমস্যা নিয়ে। শিল্পোদ্যোগীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে এমনই নানা অভাব-অভিযোগের কথা শুনলেন প্রশাসনের কর্তারা।
বর্ধমান জেলা প্রশাসনের সঙ্গে শিল্পপতি ও শিল্পোদ্যোগীদের মধ্যে আলোচনাসভা হল রানিগঞ্জ বণিক ভবনে। শুক্রবার আয়োজিত এই সভায় শিল্পোদ্যোগীরা তাঁদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। কেউ বললেন শ্রমিক অসন্তোষের কথা। আবার কারও কথায় উঠে এল ব্লক প্রশাসনের একাংশের অসহযোগিতার অভিযোগ। শিল্প সভাটির উদ্যোক্তা ছিল ফেডারেশন অফ চেম্বার অফ কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ফিকি)। উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগমের কর্তা কৃষ্ণ গুপ্ত, বর্ধমানের জেলা শাসক সৌমিত্র মোহন, আসানসোলের মহকুমা শাসক অমিতাভ দাস-সহ রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্তারা।
এই শিল্পাঞ্চলের শিল্পোদ্যোগীদের সুবিধার্থে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে একটি আঞ্চলিক কোর কমিটি গঠন করা হয়েছে। মাস কয়েক আগে আসানসোলে শিল্প-বাণিজ্য মেলায় এসে মুখ্যমন্ত্রী এই কমিটির কথা ঘোষণা করেছিলেন। মাস দেড়েক আগে থেকে তা কাজ শুরু করেছে। রাজ্য সরকারের নানা দফতরের প্রতিনিধি ও শিল্প-কর্তারা রয়েছেন সেই কমিটিতে। তবে কমিটি গড়া হলেও সমস্যা যে পুরোপুরি মিটছে না, এ দিনের সভায় সেই ইঙ্গিত মিলেছে বলে দাবি করেছেন অনেক শিল্পোদ্যোগীই।
এ দিন সভার শুরু থেকেই শ্রমিক অসন্তোষ, বেহাল রাস্তা ও রাস্তার পাশে বাতি না থাকার বিষয়টি তুলে ধরেন কয়েকজন শিল্পপতি। উঠে আসে সম্প্রতি আসানসোল শিল্পাঞ্চলে লরি অপহরণ সংক্রান্ত অভিযোগের প্রসঙ্গ। জেলা শাসক প্রতিটি সমস্যা আলাদা করে শোনেন। এক শিল্পোদ্যোগী অভিযোগ করেন, রানিগঞ্জ ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরে সঠিক পরিষেবা পাওয়া যায় না। এর পর জেলা শাসক অবিলম্বে সমস্যা মেটানোর জন্য মহকুমা শাসক অমিতাভ দাসকে নির্দেশ দেন। আসানসোলের একটি বিস্কুট কারখানার মালিক নালিশ করেন, শ্রমিক অসন্তোষের জন্য তাঁকে কারখানা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে জানিয়েও লাভ হয়নি। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন জেলাশাসক।
এ দিন পশ্চিমবঙ্গ শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগমের কর্তা কৃষ্ণবাবু জানান, নতুন শিল্প তৈরিতে ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে অনলাইন ব্যবস্থা চালু হয়েছে। ফলে পদ্ধতি ও নথি ঠিক থাকলে শিল্প তৈরিতে অনুমতি পেতে সমস্যা হবে না। তাঁর দাবি, ‘‘দক্ষিণবঙ্গে চারটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থাকার জন্য এ রাজ্যে শিল্প তৈরিতে বিদ্যুৎ সমস্যা হবে না। শিল্পোদ্যেগীদের কোনও সমস্যা হলে তাঁরা সরাসরি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, অনেক সময় জমির মিউটেশন ও চরিত্র বদল না করেই সেখানে নতুন শিল্প তৈরি করা হচ্ছে। এই বিষয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।