বর্ধমান শহরে বিজেপির মিছিল।নিজস্ব চিত্র।
জেলায় করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার ছুঁতে চলেছে। মৃত্যুর সংখ্যা আশির দোরগোড়ায়। শনিবার সকালেই মেমারির এক চিকিৎসক করোনা-আক্রান্ত হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। পুরসভা থেকে জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্যকর্মী থেকে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তার পরেও রাজনৈতিক দলগুলির সমাবেশে রাশ পড়ছে না।
শনিবার সকালে বর্ধমানে আসেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শহরের উল্লাস মোড় থেকে ঘোড়দৌড় চটির সদর কার্যালয় পর্যন্ত রাজ্য সভাপতির গাড়ি ঘিরে মোটরবাইক মিছিল করা হয়। সেই মিছিলে অনেকের মুখেই ‘মাস্ক’ দেখা যায়নি। দলের কার্যালয়ে এক বৈঠকেও অনেক নেতা-কর্মীর মুখে ‘মাস্ক’ ছিল, দূরত্ব-বিধি বজায় রাখা হয়নি বলে অভিযোগ। দলের রাজ্য সভাপতি আসায় এ দিন ঘোড়দৌড় চটির বিজেপি কার্যালয়ের সামনে কর্মী-সমর্থকদের ভাল ভিড় জমে। সেখানেও স্বাস্থ্য-বিধির বালাই ছিল না বলে অভিযোগ। একই রকম ছবি দেখা যায় জামালপুরের সাহাপুরে বিজেপির একটি জনসভাতেও।
বিজেপির সাংগঠনিক জেলা (বর্ধমান সদর) অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সুনীল গুপ্তর অবশ্য দাবি, “করোনা-আবহে যতটা সম্ভব স্বাস্থ্য-বিধি মানার চেষ্টা করছি। দলের কর্মী-সমর্থকদের এ ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। তবু অনেক সময়ে আবেগের কারণে শৃঙ্খলহীন হয়ে পড়ছেন কর্মী-সমর্থকেরা। তা কাম্য নয়।’’
এ দিন রায়না ও খণ্ডঘোষ বিধানসভায় তৃণমূলের কর্মী সম্মেলন ছিল। সেখানেও দূরত্ব-বিধি উড়িয়ে, গা ঘেঁষে বসতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের কর্মীদের। অনেকের মুখে ‘মাস্ক’ ছিল না। মঞ্চে থাকা নেতানেত্রীরাও স্বাস্থ্য-বিধি বিশেষ মানেননি বলে অভিযোগ আশপাশের বাসিন্দাদের একাংশের। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ কিছু দিন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁকে সুরক্ষিত থাকার চেষ্টা করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু নেতা-কর্মীদের অনেকে উপযুক্ত স্বাস্থ্য-বিধির তোয়াক্কা করেননি।
আইএনটিটিইউসি-র মিছিল
এ দিনই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কৃষক ও শ্রমিক বিরোধী নীতির অভিযোগ তুলে বর্ধমান স্টেশন থেকে জিটি রোড হয়ে গোলাপবাগ মোড় পর্যন্ত মিছিল করে আইএনটিটিইউসি। ছিলেন সাংসদ দোলা সেন, বর্ধমান শহরের নেতা খোকন দাস, ইফতিকার আহমেদরা। ওই মিছিলেও ভাল ভিড় দেখা যায়। মুখ থেকে ‘মাস্ক’ নামিয়ে অনেককে মিছিলে হাঁটতে দেখা গিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের অনেকে।
তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য মুখপাত্র দেবু টুডুর যদিও বক্তব্য, ‘‘মানুষকে নিয়ে আমাদের চলতে হবে। আপদে-বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য। ‘ভার্চুয়ালি’ তো তাঁদের সবার কাছে পৌঁছনো যাবে না। দাবি-দাওয়ার কথা জানতে নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়েই তাঁদের কাছে পৌঁছতে হচ্ছে।’’