আক্রান্ত: হাসপাতালে ভর্তি স্বপন রায়। —নিজস্ব চিত্র।
রাত তখন ১০টা। কালীপুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রা যাচ্ছে রাস্তা দিয়ে। সেই শোভাযাত্রায় রয়েছেন জনা পঞ্চাশেক যুবক। ডিজে বক্সে গান বাজছে। সঙ্গে মহিলাদের দিকে অশালীন অঙ্গভঙ্গি। বাড়ির সামনে এই ঘটনা ঘটতে দেখে প্রতিবাদ করেন এক বৃদ্ধ। ঘটনাস্থলেই তাঁকে এমন ভাবে মারধর করা হল যে, তিনি এখন হাসপাতালে ভর্তি।
সোমবার আসানসোল দক্ষিণ থানার নেতাজি সুভাষ রোডের ঘটনা। ঘটনাচক্রে স্বপন রায় নামে বছর পঁয়ষট্টির ওই বৃদ্ধ শহরের প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন জনাকয়েক বাসিন্দাও। দু’জনকে ধরেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতে শোভাযাত্রায় ডিজে বক্সে তারস্বরে চটুল গান বাজানো ও মহিলাদের সঙ্গে অশালীন আচরণের প্রতিবাদ করেন স্বপনবাবু। তাতেই খেপে ওই যুবকেরা তাঁর উপরে চড়াও হয়। মাটিতে ফেলে তাঁকে ঘুষি-লাথি মারতে থাকে তারা। স্বপনবাবুর বাঁ চোখে আঘাত লাগে। তাঁকে ওই ভাবে মার খেতে দেখে জড়ো হন এলাকার কিছু পুরুষ-মহিলা। ওই যুবকেরা তাঁদের উপরেও চড়াও হয়। এর পরে আরও অনেকে রুখে দাঁড়ান। বেগতিক বুঝে যুবকেরা পালায়। তবে জনতার হাতে ধরা পড়ে এক জন। স্বপনবাবুকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি এই মুহূর্তে আসানসোল হাসপাতালে ভর্তি।
দলের নেতার উপরে হামলার খবর পেয়ে রাতেই হাসপাতালে যান শহরের সিপিএম নেতারা। মঙ্গলবার হাসপাতালে শুয়ে স্বপনবাবু বলেন, ‘‘আগে কখনও এ ভাবে অপমানিত হইনি।’’ তাঁকে দেখতে হাসপাতালে যান স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর অমিয় দাঁ। চিকিৎসকেরা জানান, অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে স্বপনবাবুর চোখ।
সপ্তাহখানেক আগেই বাড়ির সামনে জুয়ার ঠেক বসানোর প্রতিবাদ করায় কুলটিতে এক প্রৌঢ়কে মারধর করে কিছু দুষ্কৃতী। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে প্রহৃত হন তাঁর ছেলেও। আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের তাপস রায়ের অভিযোগ, ‘‘এখানে এমন সংস্কৃতি আগে ছিল না। এখনই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’’ শহরের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘নিন্দনীয় ঘটনা। পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে।’’ এডিসিপি (সেন্ট্রাল) জে মার্সি জানান, ওই ক্লাবের সম্পাদক-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি জড়িতদেরও খোঁজ চলছে।