—প্রতীকী ছবি
এক সময় সিপিএমের পুরপ্রধান। পরে বিজেপি হয়ে কয়েক মাস আগে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। তবে দলের একাংশের কাছে ‘ব্রাত্য’ই ছিলেন আইনুল হক। সম্প্রতি বর্ধমান শহরের কিছু দলীয় কর্মসূচিতে দেখা যায় তাঁকে। কিন্তু আইনুল হক থাকলে, প্রয়োজনে দল ছাড়ার বার্তা দিলেন আর এক তৃণমূল নেতা খোকন দাস। তবে এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি আইনুল হক।
সোমবার বর্ধমানের কঙ্কালেশ্বরী কালীমন্দির মাঠে ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কর্মীদের নিয়ে কর্মীসভা করেন তিনি। সেখানেই দলের একাংশের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তিনি। তোলাবাজির অভিযোগও করেন। বিদায়ী কাউন্সিলর খোকনবাবুর দাবি, ‘‘এক দল লোক চাকরি করে দেব বলে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এক-একটা ওয়ার্ডে ৭০, ৮০ জন পদাধিকারী। বলছে, ‘আমাদের সঙ্গে পার্টি করলে চাকরি করে দেব’। কাগজ দিয়ে বলা হচ্ছে, ‘এত দিনে তোমাদের স্বীকৃতি দেওয়া হল’। আসলে তোলাবাজি করার জন্য কাগজ দেওয়া হচ্ছে। তোলাবাজি করে দলটাকে শেষ করে দিচ্ছে।’’ এর পরেই আইনুল হকের নাম করে তিনি বলেন, ‘‘সিপিএমের আমলে এই আইনুল হক কাঞ্চন উৎসব করতে দেননি। তখন বলেছিলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম দিয়ে কোনও কিছু করা যাবে না’। এখন তাঁর সঙ্গে দল করতে হবে! শুনে রাখুন, প্রয়োজনে দল ছেড়ে দেবে। তবুও আইনুল হকের সঙ্গে দল করব না।’’ পক্ষান্তরে, আইনুল বলেন, ‘‘দলের বঙ্গধ্বনি কর্মসূচিতে আছি। কে, কী বলেছে শুনিনি। ব্যক্তিগত মত নিয়ে আমার কোনও বক্তব্য নেই।’’
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, বছর দুয়েক আগে সিপিএম থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন আইনুল হক। মাস তিনেক আগে তৃণমূলে আসেন। প্রথমে সক্রিয় ভাবে তাঁকে দেখা না গেলেও সম্প্রতি তৃণমূলের শহর সভাপতি অরূপ দাসের (স্থানীয় রাজনীতিতে খোকন দাসের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর বলে দলের অন্দরে পরিচিত) সঙ্গে একাধিক কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। মিছিলে সামনের সারিতে হাঁটতেও দেখা গিয়েছে। দলের কর্মীদের একাংশের অনুমান, সে কারণেই খোকন দাসের এই ‘উষ্মা’।
এ দিন দলের রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন খোকন দাস। দলের জেলা সভাপতিও আইনুল হককে পাশে বসিয়ে বৈঠক করছেন বলে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। খোকনবাবু বলেন, ‘‘উচ্চ নেতৃত্বকে বলব, আপনারা পরীক্ষা করে দেখুন, কারা দলটা করে। আর কারা দলের নামে তোলাবাজি করে। ঠিক ভাবে তদন্ত করে দেখুন। মানুষের সঙ্গে কথা বলুন।’’ দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ অবশ্য বলেন, ‘‘আইনুল সাহেবকে প্রদেশ নেতৃত্ব দলে নিয়েছে। দলের ঊর্ধ্বে কেউ নয়।’’