প্রার্থনা: সোমবার বর্ধমানের এক গির্জায়। নিজস্ব চিত্র
গত বছর এমন সময়ে তাঁদের মুখের হাসি মিলিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এ বার ছবিটা পাল্টে গিয়েছে। কেক থেকে ফুল বা মোমবাতি, বড়দিনের শহরে বিক্রি হয়েছে ভালই, বলছেন ব্যবসায়ীরা। আগের বার নোট বাতিলের জেরে ব্যবসায় যে ক্ষতি হয়েছিল, এ বার তা থেকে অনেক রেহাই মিলেছে বলে দাবি তাঁদের। সোমবার বড়দিনে বর্ধমান শহরে মানুষের ঢল নামল নানা গির্জাতেও।
বড়দিনের আগে বর্ধমান শহরে রাস্তার পাশে, অলিগলিতে প্রায় আটশো কেকের দোকান গজিয়ে উঠেছে। এ ছাড়া রয়েছে বেশ কয়েকটি বড় কেক প্রস্তুতকারক সংস্থার ‘আউটলেট’। এ রকম একটি সংস্থার ম্যানেজার সনৎ হাজরা বলেন, ‘‘গত বছর কেক বিক্রি ধাক্কা খেয়েছিল। কিন্তু এ বার বিক্রির হার বেশ ভাল। পাম কেক, ফ্রুট কেকের চাহিদা খুব বেশি।’’ আর একটি সংস্থার এক কর্মী জানালেন, ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দামের কেক বিক্রি হচ্ছে বেশ ভালই।
কেক বিক্রির জন্য অস্থায়ী স্টল দিয়েছেন পারবীরহাটার সুশান্ত নন্দী, তেঁতুলতলা বাজারের বিনোদ দাস, গোলাপবাগ মোড়ের অমিত প্রসাদ, রাজবাটির চন্দন দাসেরা। তাঁরা প্রত্যেকেই বলেন, “নোটবন্দির জন্য গত বছর কেক বিক্রিতে কিছুটা হলেও ভাটা পড়েছিল। কিন্তু এ বার বিক্রি বেশ ভাল। মনে হচ্ছে, গত বছরের লোকসানটা পুষিয়ে যাবে।” শহরের বিভিন্ন অস্থায়ী কেকের দোকানদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গড়ে আড়াই লক্ষ টাকার কেক তুলেছিলেন তাঁরা। গত পাঁচ দিনে প্রায় সবই বিক্রি হয়ে গিয়েছে।
শুধু কেক নয়, বড়দিনে গোলাপ ও মোমবাতির বাজারও ভাল ছিল। কার্জন গেট ও পার্কাস রোডের গির্জার সামনে গোলাপ ও মোমবাতি বিক্রি করতে বসেছিলেন রাজু শঙ্কর, বিনোদ সোনকারেরা। তাঁদের কথায়, “হাজার চারেক গোলাপ আর মোমবাতি নিয়ে বসেছিলাম। সব বিক্রি হয়ে যাওয়ায় আবার ফুল নিয়ে আসতে হয়েছে।” চাবির রিং, সান্তা-টুপি নিয়ে বসেছিলেন ইছালাবাদের শিবানি রায়। তাঁর কথায়, “তরুণী ও শিশুদের মধ্যে এ সব কেনার খুব উৎসাহ।”
দু’টি গির্জার কর্ণধারেরা জানান, বড়দিনে ২০-২৫ হাজার মানুষের ভিড় হয়। এ দিন সেই ভিড়ের মধ্যে নিজস্বী তোলার ফাঁকে মির্জাপুরে করিশ্মা দত্ত, অদিতি মোহান্তিরা বলেন, “দুর্গাপুজোর মণ্ডপে এই রকম ছবি তুলেছি, গির্জার সামনেও তুললাম। উৎসব ভালই হল।”