প্রতীকী ছবি।
নিখোঁজ কিশোরের দেহ উদ্ধারের পরে তাকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল পরিবার। কিশোরটি যে হোটেলে কাজ করত, সেখানকারই এক কর্মীকে এই ঘটনায় গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশের দাবি, ধৃত শ্রীনাথ ওঁরাও জেরায় তাদের কাছে ব্যক্তিগত আক্রোশে রাকেশ মোদক নামে ওই কিশোরকে খুন করার কথা স্বীকার করেছে।
পূর্বস্থলীর একটি হোটেলে কাজ করত বছর ষোলোর রাকেশ। সেখানে তার সঙ্গেই কাজ করত বছর উনিশের শ্রীনাথ। ওই হোটেল থেকে প্রায় বারো কিলোমিটার দূরে ভাতুরিয়া এলাকায় বাড়ি রাকেশের। পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৪ জানুয়ারির পরে সে আর বাড়ি ফেরেনি। হোটেলের তরফে তাদের জানানো হয়, টাকাপয়সা নিয়ে রাকেশ চলে গিয়েছে। যদিও বাড়ির লোকজন তার খোঁজ না পেয়ে নাদনঘাট থানায় বিষয়টি জানান।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাকেশের বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীরা বৃহস্পতিবার ওই হোটেলের আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেন। হোটেলের পিছনে একটি পরিত্যক্ত গুদামের কাছে যেতেই কটূ গন্ধ পান তাঁরা। পুলিশ এসে সেখান থেকে রাকেশের দেহ উদ্ধার করে। পরিবারের লোকজন পুলিশে অভিযোগ করেন, রাকেশকে পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে। নিহতের বাবা নাদনঘাট থানায় হোটেলটির মালিক পবন দেবনাথ, ইজারাদার নিতাই কর্মকার ও রাকেশের সহকর্মী শ্রীনাথের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত তিন জনকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেরায় শ্রীনাথ তাদের কাছে খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি।
পুলিশের দাবি, শ্রীনাথ তাদের জানিয়েছে, রাকেশের সঙ্গে তার বিবাদ ছিল। রাকেশ তার বোনকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার হুমকি দিত। তার কথা বলার সমস্যা নিয়েও কটূক্তি করত। সে কারণে রাকেশের উপরে তার আক্রোশ তৈরি হয়েছিল। তদন্তকারীদের দাবি, শ্রীনাথ তাঁদের জানিয়েছে, ১৫ জানুয়ারি ভোরে সে রাকেশকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলা টিপে ধরে। রাকেশের শরীর নিথর হয়ে গেলে ওই পরিত্যক্ত গুদামে রেখে আসে সে।
পুলিশ সূত্রের দাবি, শ্রীনাথ জানিয়েছে, রাকেশকে কড়া শিক্ষা দেওয়ার ইচ্ছে ছিল তার। তবে খুনের উদ্দেশ্য নিয়ে গলা টিপে ধরেনি বলে দাবি করেছে সে। সোমবার ধৃতকে কালনা আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ঘটনায় তিন জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। তবে তদন্তে এখনও পর্যন্ত আমরা এক জনের জড়িত থাকার কথা জেনেছি। তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা চলছে।’’ তিনি জানান, ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। তবে তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।