গরমে হাঁসফাঁস বর্ধমান

বেলা সাড়ে ১২টা। আসানসোলের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা, এসবি গড়াই রোডের উপরে চেলিডাঙা। হাতে গোনা কয়েক জন যাতায়াত করছেন। দুর্গাপুরের একটি শপিং মল। সেখানেও এক দৃশ্য। দীর্ঘক্ষণ ‘ডিউটি’ করে ডাবে চুমুক দিয়ে স্বস্তি খুঁজছেন এক ট্রাফিক পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:১০
Share:

আড়াল: শুক্রবার আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

বেলা সাড়ে ১২টা। আসানসোলের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা, এসবি গড়াই রোডের উপরে চেলিডাঙা। হাতে গোনা কয়েক জন যাতায়াত করছেন।

Advertisement

দুর্গাপুরের একটি শপিং মল। সেখানেও এক দৃশ্য। দীর্ঘক্ষণ ‘ডিউটি’ করে ডাবে চুমুক দিয়ে স্বস্তি খুঁজছেন এক ট্রাফিক পুলিশ। এপ্রিলের শুরুতেই জেলার শিল্পাঞ্চল-সহ বর্ধমানের দাবদাহের ছবিটা এমনই।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি শিল্পাঞ্চলে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। গত বৃহস্পতিবার থেকে তার সঙ্গে শুরু হয়েছে লু-এর দাপট। বাতাসে বাড়ছে আপেক্ষিক আর্দ্রতাও। জেলার গ্রামীণ এলাকাতেও ছবিটা কমবেশি একই রকম। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, অফিস যাত্রী, স্কুল পড়ুয়াদের ভিড় কমলেই লোক জনের দেখা নেই রাস্তাঘাটে। বাসস্ট্যান্ড, স্টেশন, শপিং মলেও লোক জনের সংখ্যা হাতে গোনা। আসানসোলে জিটি রোডের বেশ কিছু অংশে পিচ গলতে শুরু করেছে বলে জানান ট্রাফিক পুলিশের কর্তারা।

Advertisement

আবহাওয়া দফতর সূত্রেও এমন দাবদাহের ছবিটা মিলেছে। কী রকম? শুক্রবার আসানসোল, দুর্গাপুর, বর্ধমানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৪১, ৪০ ও ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ কমবেশি ২৯ থেকে ৩৭ শতাংশ।

এই পরিস্থিতিতে ছেলেমেয়েদের নিয়ে চিন্তায় অভিভাবকেরাও। যেমন, আসানসোলের রেখা মিত্র, সুজিত মুখোপাধ্যায়েরা বলেন, ‘‘বাড়ি ফিরে ছেলেমেয়েরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। মুখে রুমাল বেঁধেও খুব একটা লাভ হচ্ছে না।’’ একই কথা বলেন বর্ধমানের এক মোটরবাইক চালকও। তাঁর কথায়, ‘‘কাজকর্ম রয়েছে। না হলে এখন বাড়ি থেকে কেউ বের হয়।’’ তীব্র গরমে জেলার সব্জির উৎপাদনেও প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা জেলা কৃষি দফতরের সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষের।

চিকিৎসকদের দাওয়াই, গরম থেকে বাঁচতে কিছু সতর্কতা নেওয়া দরকার। না হলে হিট স্ট্রোক বা সান স্ট্রোকের আশঙ্কা রয়েছে। রোদ থেকে সরাসরি বাড়ি বা অফিসের শীতাতপ নিয়ন্ত্রত ঘরে ঢোকা চলবে না। বাইরে বেরনোর সময়ে ছাতা, টুপি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। পেট খালি রাখাও চলবে না। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার দেবব্রত দাস বলেন, ‘‘প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। সকাল সকাল কাজ সেরে নিতে হবে। একান্তই দরকার না পড়লে রোদে না বেরনোই ভাল।’’ যত বেশি সম্ভব ডাবের জল, নুন-চিনির জল, গ্লুকোজ পান করতে হবে। তেল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলাই ভাল।

বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ইতিমধ্যেই ডাব, তরমুজের বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। বেনাচিতির ডাব বিক্রেতা রামকৃষ্ণ সহায় বলেন, ‘‘গরমে কষ্ট হচ্ছে। তবে দু’পয়সা বেশি লাভও হচ্ছে!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement