কালনার এক মন্দিরে। নিজস্ব চিত্র
এলাকার পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনের গুরুত্ব পর্যটকদের বোঝাতে উদ্যোগী হল কালনা মহকুমা ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব চর্চাকেন্দ্র। সঙ্গী হয়েছে একটি পত্রিকাও। সামিল করা হচ্ছে স্কুলের পড়ুয়াদেরও।
১০৮ শিব মন্দির, প্রতাপেশ্বর মন্দির, লালজি মন্দির, মহাপ্রভু বাড়ি থেকে দাঁতনকাঠিতলার মসজিদ— প্রাচীন নানা নিদর্শন দেখতে সারা বছরই পর্যটকের আনাগোনা হয় কালনায়। তবে উপযুক্ত গাইডের অভাবে অনেক পর্যটকই নিদর্শনগুলির ইতিহাস ঠিক ভাবে জানতে পারেন না। মাস দেড়েক আগে মহকুমা ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব চর্চাকেন্দ্রের তরফে এলাকার এই সমস্ত সম্পদের ইতিহাস পর্যটকদের জানানোর ব্যাপারে উদ্যোগের সিদ্ধান্ত হয়। পাশে দাঁড়ায় কালনার ‘ভাষাপথ’ নামে একটি পত্রিকা। ঠিক হয়, সংস্থার তরফে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এলাকার স্কুল পড়ুয়াদের। তাতে ছাত্রীছাত্রীরা যেমন এলাকার ইতিহাস জানবে, তেমনই পর্যটকদের তারা তা জানাতেও পারবে।
সংস্থার তরফে শহরের হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়ের এক দল ছাত্রীকে এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। রবিবার শহর ও আশপাশের এলাকার পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি দেখতে শ’খানেক পর্যটক আসেন। তাঁদের ১৩ জন ছাত্রীর একটি দল রাজবাড়ি চত্বরের বিভিন্ন মন্দির ও ১০৮ শিবমন্দিরের ইতিহাস জানায়। ১০৮ শিবমন্দিরে দাঁড়িয়ে এক পর্যটক সুজাতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেয়েরা মন্দিরগুলি সম্বন্ধে বহু তথ্য জানাল। আগেও কালনায় এসেছিলাম। তখন এত সহযোগিতা পাইনি।’’ পর্যটকদের নানা তথ্য জানাতে পেরে খুশি ছাত্রীরাও। একাদশ শ্রেণির অঙ্কিতা দাসের কথায়, ‘‘খুব ভাল অভিজ্ঞতা। শুধু পর্যটকদের নয়, কালনার দর্শনীয় স্থানের কথা আমরা আত্মীয়-পরিজনদেরও জানাব।’’ এ দিন শহরের অন্য নানা দ্রষ্টব্য স্থানের ইতিহাস পর্যটকদের শোনান ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব চর্চাকেন্দ্রের সদস্যেরা।
ওই সংগঠনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ গাইন বলেন, ‘‘এই কাজে আরও অনেক স্কুলকে আমরা যুক্ত করার চেষ্টা করছি। ইতিমধ্যে দু’টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলকে চিঠিও পাঠানো হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য, কালনার সম্পদের কথা বেশি করে জানানো।’’ উদ্যোগী পত্রিকাটির তরফে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধারাবাহিক ভাবে এমন কাজ করা গেলে গাইডের সমস্যা অনেকটাই দূর হবে।’’