সদ্যজাত শিশু বদলের অভিযোগ উঠল মেমারি গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। শুক্রবারের ঘটনা। ওই পরিবারের তরফে বিএমএইচের কাছে অভিযোগও জানানো হয়েছে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শিশুদের জন্মের তথ্য সম্পর্কিত রেজিস্টার অনুযায়ী ওই শিশুটিকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এক জন আয়া ভুল করে এক পরিবারকে অন্য পরিবারের পুর সন্তানের জন্মের কথা জানিয়ে থাকতে পারেন বলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত রবিবার মেমারির পারিজাত নগরের বাসিন্দা অলকা বালা মেমারি গ্রামীণ হাসপাতালে প্রসবের জন্য ভর্তি হন। ওই হাসপাতালেই বুধবার প্রসবের জন্য ভর্তি হন মেমারির খয়েরগ্রামের বাসিন্দা মাম্পি ঘোষ। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ অস্ত্রোপচার করে একটি শিশুপুত্রের জন্ম দেন অলকাদেবী। তাঁকে তা জানানোও হয়। কিছুক্ষণ পরে সে দিনই মাম্পিদেবীও এক শিশুর জন্ম দেন। হাসপাতালের দাবি, তখনই শিশুকন্যার জন্মের খবর জানানো হয় তাঁকে। গোলমাল বাধে এরপরেই। মাম্পিদেবীর পরিবারের দাবি, শিশুর জন্মের কিছুক্ষণ পরে হাসপাতালে কর্তব্যরত এক আয়া বাইরে এসে তাঁদের জানান, ছেলে হয়েছে। পরে যখন প্রসবের ঘর থেকে হাসপাতালের সাধারণ শয্যায় আনা হয় মাম্পিদেবীকে তখন একটি শিশুকন্যআ দেওয়া হয় তাঁকে। অভিযোগ, তখন তিনি শিশুকন্যাটিকে নিতে অস্বীকার করেন। তাঁর বাড়ির লোকেরাও শিশুটিকে নিতে চাননি। গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, জন্মের রেজিস্টার দেখে মাম্পিদেবীকে জানানো হয়, ওই দিন তিনি একটি শিশুকন্যার এবং অলকাদেবী একটি শিশুপুত্রের জন্ম দিয়েছেন। সেই মতো শিশু দুটিকে তাদের নিজের নিজের মায়ের কাছে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অলকাদেবী বলেন, ‘‘আমায় ডাক্তারবাবুরা শিশু হওয়ার পরেই জানিয়েছিলেন আমার পুত্র সন্তান হয়েছে। তাই আমি আমার শিশুপুত্র পেয়েছি।’’ মাম্পিদেবীর দাবি, ‘‘শিশু হওয়ার পরে আমি ঘোরের মধ্যে ছিলাম।’’ আর কিছু বলতে চাননি তিনি। তাঁর স্বামী সঞ্জীব ঘোষও বলেন, ‘‘এক আয়া বাইরে এসে জানায় আমাদের শিশু পুত্র হয়েছে। সে জন্যই আমরা অভিযোগ জানিয়েছি।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সঞ্জীববাবু বিএমওএইচ ধীরাজকুমার রায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ করে শিশু বদলের কথা জানিয়েছেন। তাদের ডিএনএ পরীক্ষারও দাবি জানিয়েছেন। ধীরাজবাবু জানিয়েছেন, হাসপাতালে শিশুদের জন্ম সম্পর্কিত রেজিস্টার অনুযায়ী দুটি শিশুকেই তাদের নিজেদের মায়ের কোলে তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে যেহেতু সঞ্জীববাবু অভিযোগ করেছেন তাই এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে তার রিপোর্ট মিলবে। আপাতত শিশু দুটি ও তাদের মায়েরা এই হাসপাতালেই ভর্তি থাকবে বলেও জানান তিনি।