বাড়িতে ফাটল বিলপাহাড়িতে।
দ্রুত পুনর্বাসনের দাবিতে তিন দিন ধরে বিস্ফোরণের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে খনিতে। পাণ্ডবেশ্বরের বিলপাহাড়িতে খোলামুখ খনির আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিস্ফোরণের জেরে গোটা পঞ্চাশ বাড়িতে ফাটল ধরে গিয়েছে। সব সময় আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। সে কারণে কিছু গ্রামবাসী খনিতে গিয়ে কাজে আপত্তি জানিয়েছেন।
৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের খোট্টাডিহি মোড় থেকে এক কিলোমিটার দূরে বিলপাহাড়ি গ্রাম। তার পাশেই চলছে খোলামুখ খনির কয়লা তোলার কাজ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সেখানে শ’দুয়েক পরিবারের বাস। শনিবার দুপুরে স্থানীয় বাসিন্দা মাধব ঘোষের বাড়ির ছাদ থেকে চাঙড় খসে পড়ে বলে অভিযোগ। মাধববাবুর কথায়, ‘‘হঠাৎ খনিতে বিস্ফোরণের জন্য বাড়ির ছাদ থেকে প্রায় এক ফুট আকারের চাঁই খসে পড়ে। কারও উপরে পড়লে ভয়ানক ঘটনা ঘটতে পারত।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, এর পরেই এলাকার একটি ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে গিয়ে কিছু গ্রামবাসী খনির কাজ বন্ধ করে দেন। তাঁদের অভিযোগ, অবৈজ্ঞানিক ভাবে বিস্ফোরণ ঘটানোয় বাড়ির ক্ষতি হচ্ছে।
গ্রামের বাসিন্দা, ইসিএলের কর্মী জীবনকুমার কবিরাজের দাবি, বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের জন্য খোট্টাডিহি গ্রামের পাশে জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। সংস্থা কর্তৃপক্ষ সেখানে বাড়ি করার জন্য অর্ধেক পরিবারকে এক কিস্তির টাকাও মিটিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু চিহ্নিত জায়গায় কোনও কাজ শুরু হয়নি। কে কত কত জমি পাবেন, তার নকশাও তৈরি হয়নি।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, খোলামুখ খনি সম্প্রসারণের আগে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা হয়নি। তাঁরা বারবার পাণ্ডবেশ্বর এরিয়া কর্তৃপক্ষকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে খনি চালানোর আবেদন জানালেও তাতে সাড়া মেলেনি। তাঁদের আরও দাবি, খনি সম্প্রসারণের জেরে বিলপাহাড়ি গ্রামের ২৯টি চাপাকলের মধ্যে ২৮টিতে জল পড়ে না। কুয়োগুলি শুকিয়ে গিয়েছে। পরিত্যক্ত খোলামুখ খনির জল ব্যবহার করতে হচ্ছে তাঁদের। যাঁদের সামর্থ্য রয়েছে তাঁরা জল কিনে খাচ্ছেন। কিছু বাড়িতে সাবমার্সিবল পাম্পের সাহায্যে জল তোলা হয়। কিন্তু গ্রীষ্মকালে সেই জলও মিলবে না বলে আশঙ্কায় রয়েছেন তাঁরা। তাই আন্দোলনের প্র্স্তুতি নিচ্ছেন। তার জেরেই কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন।
ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায়ের অবশ্য আশ্বাস, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। দ্রুত নিষ্পত্তি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।