উড়ে গিয়েছে চাল। নিজস্ব চিত্র
বিস্ফোরণে জখম হলেন তিন ঠিকাকর্মী। বৃহস্পতিবার সকালে বুদবুদের কোটা গ্রামের জলট্যাঙ্কি তলার ঘটনা। পুলিশ জানায়, জখম ধর্মেন্দ্র কুমার, শম্ভু গিরি ও হরি হাজরাকে রাজবাঁধের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার ‘লিক’ করার ফলেই এই ঘটনা।
বুদবুদ থানার পুলিশ জানায়, কোটা গ্রামের বাসিন্দা সনাতন দাসের জলট্যাঙ্কি তলার বাড়িতে পানাগড় শিল্পতালুকের বেশ কয়েকটি কারখানার কর্মীরা ভাড়া থাকেন। তেমনই একটি ঘরে আহতরা-সহ চার জন ভাড়া থাকতেন। এ দিন সকালে গ্যাসে রান্নার কাজ করছিলেন ওই তিন জন। অন্য জন তখন বাইরে ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৬টা ১০ মিনিট নাগাদ আচমকা ঘরের চাল ভাঙার শব্দ মেলে।
খানিক বাদে চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে যান এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা পিন্টু বাগদি, হিরু মণ্ডলেরা জানান, ওই সময়ে ঘরটি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তিন জনকে বার করেন অন্য ভাড়াটিয়ারা। তাঁদের প্রথমে মানকর গ্রমীণ হাসপাতাল ও পরে রাজবাঁধের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। দেখা যায়, যে ঘরে ঘটনাটি ঘটেছে সেটির অ্যাসবেস্টসের চালের একাংশ উড়ে গিয়েছে। আরও দেখা যায়, পুড়ে গিয়েছে ঘরের ভিতরের যাবতীয় জিনিসপত্র।
পুলিশ জানায়, ধর্মেন্দ্র, শম্ভু বিহারের মুজফ্ফরপুর এবং হরি হাওড়ার বাসিন্দা। প্রায় তিন বছর ধরে তাঁরা এই গ্রামে রয়েছেন।
কেন এই ঘটনা? পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে, এ দিন ভোর রাতে ওই ব্যক্তিরা ঘরের ভিতরে গ্যাস-আভেনে রান্না করছিলেন। রান্না শেষে আভেনের ‘নব’ বন্ধ থাকলেও সিলিন্ডারের ‘নব’ খোলা ছিল বলে জানান তদন্তকারীরা। তার ফলে সিলিন্ডার থেকে গ্যাস ‘লিক’ হতে থাকে বলে তদন্তকারীরা জানান।
তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, গ্যাস লিকের বিষয়ে ওই কর্মীরা হয়তো কিছু বুঝতে পারেননি। খানিক বাদে সকাল ৬টা নাগাদ ফের গ্যাস জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে দরজা-জানলা বন্ধ ঘরে বিস্ফোরণ ঘটে যায়। তাতেই অগ্নিদগ্ধ হন ওই তিন জন।
পুলিশ জানায়, ধর্মেন্দ্র ও শম্ভু রান্না করছিলেন। হরিবাবু সেই সময়ে ঘরেই শুয়ে ছিলেন। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে গ্যাস লিকের জেরেই এই ঘটনা। ঘটনার তদন্ত চলছে।’’
ঘটনার পরেই গ্রামবাসী আতঙ্কে রয়েছেন। তাঁরা জানান, সংশ্লিষ্ট এলাকার আশপাশে ‘বটলিং প্ল্যান্ট’, সিমেন্ট কারখানা-সহ বেশ কয়েকটি কারখানা রয়েছে। কোনও কারণে আগুন ধরে তা ছড়িয়ে পড়লে বড়সড় বিপত্তি ঘটতে পারত। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছেন এলাকাবাসী।