গত চার দিন ধরে নিষ্প্রদীপ হয়ে রয়েছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল।—ফাইল চিত্র।
পাকাপাকি ভাবে কারখানার গেটে তালা পড়ে গিয়েছে গত ৩১ জানুয়ারি। এ বার কর্মী আবাসন ও বাজার এলাকার বিদ্যুৎ ছিন্ন করে দিয়েছেন রূপনারায়ণপুরের হিন্দুস্তান কেবলস কর্তৃপক্ষ। গত চার দিন ধরে নিষ্প্রদীপ হয়ে রয়েছে বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এই অবস্থায় খুবই সমস্যায় পড়েছেন বর্তমানে চাকরিহীন কর্মী ও তাঁদের পরিবারগুলি। সমস্যায় এলাকার বাসিন্দারা। কারণ, বাজারের বিদ্যুৎ সংযোগও কেটে দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে সংযোগ জুড়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে সোমবার এলাকার মানুষ জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন।
প্রায় ৫০ বছর আগে রূপনারায়ণপুরের কেবলস কারখানার আওতায় থাকা এলাকায় আটটি বাজার গড়ে উঠেছিল। মাসিক ভাড়ার বিনিময়ে ৯৯ বছরের লিজে এই বাজারগুলিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের জমি দিয়েছিলেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। কারখানার তরফে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থাও করা হয়। এ বছর ৩১ জানুয়ারি পাকাপাকি ভাবে কারখানার ঝাঁপ পড়তেই কর্তৃপক্ষের তরফে বাজারের জমি খালি করে দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়। কিন্তু, বাজার খালি করে কেউই উঠে যাননি।
এই অবস্থায় গত শুক্রবার সকালে সব ক’টি বাজারের বিদ্যুৎ ছিন্ন করা হয়। সে দিনই বিদ্যুৎ সংযোগ কাটা হয় কেবলস অনুমোদিত সাতটি প্রাথমিক ও দু’টি মাধ্যমিক স্কুলের। প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রায় চার ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও সাড়া না পেয়ে এ দিন বাসিন্দারা জেলা প্রশাসনের কাছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সংযোগ জুড়ে দেওয়ার আবেদন করেন। আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারন) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে আমরা আধিকারিক পর্যায়ে আলোচনা শুরু করেছি।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেবলসের অধিগৃহীত জমিতে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সংযোগ দিতে হলে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নো-অবজেকশন শংসাপত্র নিতে হবে। কিন্তু, কর্তৃপক্ষ তা দিতে না চাইলে সংযোগ জোড়ার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দেবে। সে ক্ষেত্রে রাজ্যপালের বিশেষ অনুমতি নিয়ে সংযোগ জোড়া যায়। তবে তা সময়সাপেক্ষ। প্রশাসন অবশ্য সব সম্ভাবনা খোলা রেখেই বিকল্প ব্যবস্থার চেষ্টা চালাচ্ছে।
বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করার প্রসঙ্গে কেবলস অনুমোদিত স্কুলগুলির প্রশাসক ঊমেশ ঝা অবশ্য এ দিন জানান, তাঁদের অনুমোদিত স্কুলগুলিতে রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের সংযোগ জুড়তে কর্তৃপক্ষের তরফে নো অবজেকশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দু’এক দিনের মধ্যেই সেই শংসাপত্র কলকাতা কার্যালয় থেকে চলে আসার কথা।