পূর্বস্থলীর বিদ্যানগরে ল’কলেজের জন্য জমি পরিদর্শনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল।
উৎসবে যোগ দিতে এসে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মঙ্গলবার পূর্বস্থলী ১ ব্লকে খালবিল, চুনোমাছ, পিঠেপুলি ও প্রাণিপালন উৎসবে এসে তিনি দাবি করেন, বিজেপি ক্ষমতায় থাকলে মাছ-মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেয়। যেখানেই তারা জিতছে, সেখানেই ভয়ঙ্কর কাণ্ড-কারখানা ঘটাচ্ছে। তাদের থেকে সতর্ক থাকতে হবে বলে দাবি করেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রীচৈতন্যের ‘সার্থক উত্তরাধিকারী’ বলেও এ দিন মন্তব্য করেন ব্রাত্য। বিজেপির পাল্টা দাবি, লোকসভা ভোটের আগে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য এ সব মন্তব্য করছেন তৃণমূল নেতারা।
মঙ্গলবার ছিল এই উৎসবের শেষ দিন। উৎসবের মুখ্য উদ্যোক্তা রাজ্যের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের আমন্ত্রণে এ দিন দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী প্রথমে বিদ্যানগর গয়ারাম দাস বিদ্যামন্দিরে একটি আইন কলেজের প্রস্তাবিত জমি পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে তিনি যান বাঁশদহ বিলের পাড়ে একটি অতিথিশালায়। বিকেলে কিছুটা দূরে উৎসব মঞ্চে পৌঁছন শিক্ষামন্ত্রী। সেখানেই তিনি দাবি করেন, ‘‘এখানে বিজেপি ক্ষমতায় থাকলে মাছ-মাংস খেতে পারতেন না। দিল্লিতে মাছ-মাংস খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। মধ্যপ্রদেশে মাংসের দোকানের শাটার নামিয়ে দিয়েছে। ওরা আপনার সংস্কৃতিতে হাত দেবে। আপনি বাংলা বলতে পারবেন না। আপনি মাছ খেতে পারবেন না!’’
বিজেপির কোনও নেতা পিঠেপুলি ও চুনো মাছ উৎসব করতে পারবে না দাবি করে এমন আয়োজনের জন্য স্বপন দেবনাথকে সাধুবাদ জানান ব্রাত্য। তিনি বলেন, ‘‘স্বপনদা এখানে বড় কাজ করছেন। প্রকৃতির সঙ্গে উৎসবের, সংস্কৃতির, দৈনন্দিন জীবনকে মিশিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বিল সংরক্ষণ করে চুনো মাছের উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। এত বড় ব্যাপার এখানে হচ্ছে, না এলে দেখতে পারতাম না।’’ শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, ‘‘শ্রীচৈতন্য সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলেছিলেন। বিভেদের রাজনীতি করেননি। চৈতন্যের যদি সার্থক কোনও উত্তরাধিকারী এই মুহূর্তে থাকেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’
শিক্ষামন্ত্রীর এমন মন্তব্যে বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বাঙালির সঙ্গে মাছ-ভাতের সম্পর্ক রয়েছে। বাংলায় মাছ-মাংস বন্ধের বিষয়ে দল কোথাও কিছু বলেনি। বিজেপি বাংলার সংস্কৃতিকে সম্মান দেয়। লোকসভা ভোটের আগে অসত্য তথ্য তুলে ধরে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন উনি।’’
পূর্বস্থলীর বিদ্যানগরে স্কুল চত্বরে আইন কলেজ তৈরির বিষয় নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে এটা স্বপনদা চেষ্টা করছেন। এটা হওয়া দরকার আছে। নিয়মমাফিক কিছু জিনিস দেখে আমরা দ্রুত কলেজটি তৈরির চেষ্টা করব।’’ এ দিন উৎসবের মঞ্চে মন্ত্রী স্বপনের জন্মদিনও পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে ছিলেন বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল, কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ প্রমুখ।