DVC Released Water

বৃষ্টি কমলেও বাড়ল জল ছাড়া, উদ্বেগ

সোমবার দুপুরে ডিভিসির মাইথন জলাধার থেকে ১০ হাজার কিউসেক হারে ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৩৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর, আসানসোল শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২০
Share:

জল ছাড়া হচ্ছে মাইথন জলাধার থেকে। ছবি: পাপন চৌধুরী।

ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ায় সোমবার জল ছাড়ার পরিমাণও বাড়ল ডিভিসির জলাধারগুলি থেকে। সেই সঙ্গে বাড়ল দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণও। তবে সোমবার জেলায় বৃষ্টি কম হওয়ায় বিভিন্ন জায়গা থেকে জল নামতে শুরু করেছে। তবে এখনও অনেক এলাকা জলমগ্ন বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। গ্রামীণ এলাকায় কিছু বাড়ি ভেঙে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দুর্গাপুরে জলমগ্ন এলাকা থেকে কিছু বাসিন্দাকে
সরানো হয়েছে।

Advertisement

সোমবার দুপুরে ডিভিসির মাইথন জলাধার থেকে ১০ হাজার কিউসেক হারে ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৩৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছাড়া হয়। ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ডে তেনুঘাট জলাধারে জলের চাপ বাড়ায় পাঞ্চেত থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বেড়েছে। এই জলাধারের জলধারণ ক্ষমতা ৪৩৫ ফুট। সোমবার দুপুর জলস্তর ৪১২ ফুটের আশপাশে ছিল। মাইথন জলাধারের জলধারণ ক্ষমতা ৪৯৫ ফুট। সোমবার সেখানে জলস্তর ছিল ৪৮৪ ফুটের মধ্যে। ডিভিসি কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, গত দু’দিনে যে পরিমাণ জল ঝাড়খণ্ডের তিলাইয়া, তেনুঘাট ও কোনার থেকে এই দুই জলাধারে এসেছে, সে তুলনায় জল ছাড়ার পরিমাণ কম। সোমবার সকাল থেকে বৃষ্টি কিছুটা কম হওয়ায় মঙ্গলবার জল ছাড়া কমানো হতে পারে বলে ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে। দুর্গাপুর ব্যারাজে রবিবার রাতে প্রায় ৫৪ হাজার কিউসিক হারে জল ছাড়া হয়েছিল। সোমবার সকালে তা বেড়ে প্রায় সাড়ে ৮৪ হাজার কিউসেক হয়। দিনভর এই হারেই জলই ছাড়া হয়েছে।

রবিবার রাতেও বৃষ্টি হয় জেলায়। তবে গাছ পড়ার ঘটনা ঘটেনি।
শহরে নতুন করে কোনও এলাকা জলমগ্ন হওয়ার খবরও মেলেনি। কুলটির প্রিয়া কলোনির বেশ কিছু জায়গায় সোমবারও জল জমে থাকতে দেখা গিয়েছে। আসানসোল পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে সাফাইকর্মীরা বাড়তি কাজ করে নিকাশি ব্যবস্থা
সচল রাখছেন।

Advertisement

রবিবার রাত থেকে জল জমতে শুরু করে দুর্গাপুরের মেনগেট ও কাদা রোড এলাকায়। ওই এলাকা দিয়ে বয়ে গিয়েছে তামলা নালা। তামলা উপচে অনেক বাড়িতে জল ঢুকে যায়। মানগেট ও আমরাইয়ের সংযোগকারী পুল জলের তলায় চলে যায়। উপদ্রুত এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করা হয়। স্টিল পার্ক এলাকাতেও কয়েকটি বাড়িতে জল ঢুকে যায়। রিভারসাইড এলাকার বাসিন্দা ললিতা মণ্ডল বলেন, “রাত থেকেই বাড়িতে জল ঢুকতে শুরু করে। কোনও রকমে প্রাণ হাতে বেরিয়ে আসি।’’ অনিল মাহাতোর কথায়, ‘‘প্রতি বছর বর্ষায় আমাদের এই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। মাস দুয়েক আগেও এক বার বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছিল। খবর পেয়ে রিভারসাইড এবং স্টিল পার্ক এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন পুরসভার প্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য ধর্মেন্দ্র যাদব জানান, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তিনি বলেন, “রবিবার রাতেই রিভারসাইড এলাকার নিচু জায়গাগুলি থেকে বাসিন্দাদের
সরিয়ে তৃণমূল কার্যালয় লাগোয়া হলঘরে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসনের তরফে খাবার ও জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

দুর্গাপুর ব্যারাজের রাস্তা গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পুরোপুরি বেহাল হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন ধরেই এই রাস্তা বেহাল। ইট পেতে খন্দ ভরাট হয়েছিল। বৃষ্টিতে তা সরে গিয়ে নতুন করে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। সোমবার সকালে যাত্রী-সহ একটি টোটো খন্দে পড়ে উল্টে যায়। এর পরেই দুর্ঘটনা এড়াতে অটো ও টোটো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে পুলিশ। ব্যারাজের উপর দিয়েই গিয়েছে দুর্গাপুর থেকে ওড়িশা সীমান্তগামী ৯ নম্বর রাজ্য সড়ক। অবিলম্বে রাস্তা মেরামতির দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে রাস্তা সংস্কারের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। দ্রুত কাজ করা হবে।

দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকে কয়েকটি মাটির বাড়ি আংশিক ভেঙে পড়েছে। প্রায় ১০-১২টি পরিবারকে নিরাপদ জায়গায় সরানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পঞ্চায়েতের তরফে উপদ্রুত এলাকায় ত্রিপল বিলি করা হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement