সেই নোটিস। নিজস্ব চিত্র
দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার সম্প্রসারণ হবে। সে জন্য বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে উচ্ছেদের নোটিস জারি করেছেন দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানা (ডিএসপি) কর্তৃপক্ষ। এর জেরে চিন্তায় পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। অরাজনৈতিক আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এএসপি মোড় সংলগ্ন বস্তি, গেট নম্বর ২ এলাকা, তামলা ব্রিজ, ফরিদপুর বস্তি, পলাশডিহা, ভিড়িঙ্গি রোড, চাষিপাড়া, মেনগেট-সহ নানা এলাকায় উচ্ছেদের নোটিস দিয়েছে ডিএসপি। অবিলম্বে অবৈধ বসবাসকারীদের সরে যেতে বলা হয়েছে। সোমবার নোটিস দেওয়া হয়। নোটিসের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বাসিন্দারা জানান, কয়েক দশক ধরে তাঁরা এই সব এলাকায় বসবাস করছেন। এখন তাঁরা কোথায় যাবেন?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুর্গাপুরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফরিদপুর বস্তির একটি ক্লাবে গ্রামসভার ডাক দেওয়া হয়। গ্রামের বহু পুরুষ ও মহিলা সেই সভায় যোগ দেন। একজোট হয়ে আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সভায়। গ্রাম কমিটির পক্ষে মানিক রুইদাস, বিট্টু সান্যালেরা বলেন, “এটা আমাদের নিজেদের লড়াই। অরাজনৈতিক ভাবে আমরা আন্দোলন করব।” এলাকাবাসীর বক্তব্য, যখন বস্তি তৈরি হয়েছিল, তখনই নিষেধ করা উচিত ছিল। বহু বছর ধরে তাঁরা বসবাস করছেন। তাঁদের দাবি, দুর্গাপুর পুরসভার তরফে রাস্তা, নিকাশি, পানীয় জলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ভোটার, আধার কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি রয়েছে এই ঠিকানায়। তাই পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে, তবেই বস্তি উচ্ছেদ করা হোক।
এএসপি মোড়ে দোকান রয়েছে রাজীবকুমার মণ্ডলের। তিনি বলেন, “আমরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছি। ডিএসপি কর্তৃপক্ষ এলাকাবাসীর সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন। দেখা যাক কী হয়।” ‘বস্তি কল্যাণ সমিতির’ তরফে হিরাপ্রসাদ সিংহ বলেন, “এলাকায় ভোটার রয়েছেন প্রায় ১,২০৪ জন। বসবাসের পাশাপাশি, অনেকে দোকান করেছেন। এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দা আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে, তার পরেই উচ্ছেদ করা উচিত।”
বুধবার পলাশডিহার বাসিন্দারা গিয়েছিলেন ডিএসপির প্রশাসনিক ভবনে। তাঁদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন ডিএসপির তরফের আইনজীবী। ফের ২৯ জুলাই তাঁদের যেতে বলা হয়েছে বলেদাবি গ্রামের বাসিন্দাদের। ডিএসপির এক আধিকারিক বলেন, “নিয়ম মেনেই উচ্ছেদের নোটিস দেওয়া হয়েছে। আইন মেনে পরবর্তীপদক্ষেপ হবে।”