—নিজস্ব চিত্র।
শিবের কোলে আসীন দুর্গা। বাহনহীন দেবীর ত্রিশূলে গেঁথে নেই মহিষাসুরও। তার জায়গায় রয়েছে মহাদেবের বাহন ষাঁড়। দুর্গার পাশে লক্ষ্মী বা সরস্বতীর বাহনকেও দেখা যায় না। তবে কার্তিক এবং গণেশ বাহন-সহই উপস্থিত। বর্ধমানের বড়শুলের দে পরিবারে এ রূপেই দেখা যায় দুর্গাকে। এখানে হরগৌরী রূপেই পুজো চলে দেবীর।
দে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, প্রায় আড়াইশো বছর আগে তাঁদের জমিদারি ছিল। সে সময় দামোদরে নৌবাণিজ্যের সূত্রে দূরদূরান্ত থেকে বণিকরা আসতেন জমিদারবাড়িতে। এক বার তীর্থযাত্রীদের একটি দল গঙ্গাসাগরে যাওয়ার পথে দামোদর লাগোয়া বড়শুলে ছাউনি করে। সে সময় দে পরিবারেই আশ্রয় নেয় তারা।
কথিত যে ওই তীর্থযাত্রী দলের এক সাধুর ঝুলিতে বেশ কতগুলি মূর্তি ছিল। তার মধ্যে হরগৌরী মূর্তি পছন্দ হয় দে পরিবারের এক কিশোরীর। সে সময় থেকে পরিবারের মন্দিরে ঠাঁই পান হরগৌরী। তার পর থেকেই হরগৌরীর পুজো হয়ে আসছে বড়শুলের এই জমিদারবাড়িতে।
পরিবারে এক সদস্য হিমাদ্রিশঙ্কর দে বলেন, ‘‘এ পরিবারে শাক্ত মতে দুর্গাপুজো হয়। বলিদানের প্রথাও চালু রয়েছে। সপ্তমীতে ছাঁচি কুমড়ো এবং অষ্টমীতে ছাগ বলি দেওয়া হয়। ন’রকমের ফল উৎসর্গ করা হয় নবমীতে।’’ তবে আগেকার সেই জাঁকজমক আর নেই। ট্রাস্টি বোর্ডের ম্যানেজার দীপককুমার দে বলেন, ‘‘এক সময় দুর্গাপুজো উপলক্ষে জলসা, ধর্মীয় সঙ্গীতের আসর থেকে শুরু করে নাটক, কবিগান, কীর্তনের আসর বসলেও আজকাল সে সব হয় না। তবে পুজোর কৌলিন্যে আজও ভাটা পড়েনি।’’