দামোদরের বীরভানপুর ঘাটের পাড়ে জড়ো করে রাখা হয়েছে কাঠামো। নিজস্ব চিত্র।
নদ-নদী দূষণমুক্ত রাখতে হবে। তাই মঙ্গলবার সকালে দুর্গাপুরের বিভিন্ন বিসর্জনের ঘাট পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করে দুর্গাপুর পুরসভা। এ দিকে, কাঁকসাতেও পুজো উদ্যোক্তাদের দ্রুত প্রতিমার কাঠামো জল থেকে তুলে ফেলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ব্লক প্রশাসন।
দুর্গাপুরের বীরভানপুরে দামোদরে বিসর্জন ঘাট রয়েছে। পুরসভা সেখানে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়েছে। দুর্গাপুজোর বিসর্জন উপলক্ষে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে প্রতি বছর। এ বারেও সে ভাবেই আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয় বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। ঘাট থেকে বেশ কিছুটা দূর পর্যন্ত নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। পুজোর উপাচার, ফুল-বেলপাতা প্রভৃতি সেই নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার ব্যবস্থা করা হয়। তা ছাড়া, প্রতিমা বিসর্জনের পরে, প্রতিমার সাজ-সহ অন্য সামগ্রীও যাতে সে জালে আটকে যেতে পারে, তেমনই ব্যবস্থা করা হয়। ফলে, দামোদরের জলে সে সব বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তা ছাড়া, বিসর্জন উপলক্ষে পুলিশের তরফে ঘাটে সিসি (ক্লোজ়ড সার্কিট) ক্যামেরা লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়। প্রস্তুত ছিল বিপর্যয় মোকাবিলা দলও।
সোমবার রাতে বীরভানপুর ঘাটে ৪৬টি প্রতিমা বিসর্জন হয়। মঙ্গলবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, সেই প্রতিমাগুলির কাঠামো যন্ত্র নামিয়ে তুলে ফেলা হয়েছে। সাফ করে ফেলা হয় বাকি বর্জ্যও। দুর্গাপুর পুরসভার ৪ নম্বর বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দামোদর দূষণমুক্ত রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুরসভার পাশাপাশি, পুলিশ-প্রশাসন, বিপর্যয় মোকাবিলা দল বিসর্জন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছিল।” বীরভানপুর ঘাট ছাড়াও, এমএএমসি এলাকার অর্জুন বাঁধে বহু প্রতিমা বিসর্জন করা হয়ে থাকে। মঙ্গলবার সেখানে গিয়ে দেখা গিয়েছে, বাঁশ দিয়ে ঘেরা জায়গায় কিছু কিছু ফুল-বেলপাতা-সহ অন্য উপাচার পড়ে থাকলেও কাঠামো জলে নেই। সব তুলে ফেলা হয়েছে।
পুরপ্রধান দিলীপ অগস্তি বলেন, ‘‘বিসর্জন উপলক্ষে কোথাও কোনও গোলমালের খবর নেই। তবে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।’’
এ দিকে, কাঁকসা ব্লকের ৫০টিরও বেশি পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন হয়। সর্বজনীন পুজোর পাশাপাশি, বহু পারিবারিক পুজো হয় এই ব্লকে। অধিকাংশ পারিবারিক পুজোর প্রতিমা দশমীতে বিসর্জন হয়ে গিয়েছে। কিছু সর্বজনীন পুজোর প্রতিমাও বিসর্জন হয়ে গিয়েছে দশমীর রাতে। পুলিশ জানিয়েছে, মাটি গলে গেলেই কাঠামোগুলিকে পুকুর থেকে তুলে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে উদ্যোক্তাদের। তা ছাড়া, ফুল-বেলপাতা-সহ পুজোর অন্য উপকরণ পুকুরের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানাগড়ের বড় ক্যানাল, লালসায়র-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় প্রতিমা বিসর্জনের ভিড় বেশি থাকে। সেগুলিতে বাড়তি নজরদারি চালানো হচ্ছে। বিডিও (কাঁকসা) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কোনও পুজো উদ্যোক্তা নিয়ম না মানলে, উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’