প্রতীকী ছবি।
ভোট-বিধি চালু হওয়ায় গেরোয় পড়েছেন মেয়ের বিয়ে ঠিক হওয়ায় বাবা-মায়েরা। রাজ্য সরকারের রূপশ্রী প্রকল্পে অনুদান পাওয়ার জন্যে অনেকেই নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করে আবেদন করেছেন। অনেকে ফর্ম জমা দেওয়ার তোড়জোড় করছেন। কিন্তু লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ায় নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে গিয়েছে। তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, সরাসরি ভোটারদের হাতে কোনও অর্থ দেওয়া যাবে না। তাতেই ওই প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না কালনার রীনা কর্মকার কিংবা আউশগ্রামের তাহমিনা খাতুনেরা।
১৮ বছর বয়সের পরে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার জন্য রূপশ্রী প্রকল্পে ২৫ হাজার টাকা পায় পরিবার। সে জন্যে বিয়ের এক মাস আগে নিমন্ত্রণ পত্র, পাত্র ও পাত্রীর বয়সের প্রমাণপত্র ব্লক বা পুরসভা দফতরে জমা দিতে হয়। বার্ষিক দেড় লক্ষ টাকা আয়, এমন পরিবারগুলিই রূপশ্রী প্রকল্পের জন্যে আবেদন করতে পারেন। বিভিন্ন ব্লক ও পুরসভাগুলি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভোট প্রক্রিয়া চলাকালীন বিয়ে হবে এমন কয়েকশো পাত্রীর পরিবার ফর্ম তুলেছেন। তাঁদের মধ্যে ৭০ শতাংশ নিয়ম মেনে আবেদন করেছেন। তাঁদের টাকা অনুমোদনও করেছে রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতর। কিন্তু বিয়ের জন্য প্রাপকদের হাতে ওই টাকা পৌঁছনোর আগেই ভোটের আচরণবিধি চালু হয়ে গিয়েছে। জেলায় ওই প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক মৌলি সান্যাল বলেন, “যাঁরা ফর্ম নিয়ে গিয়েছেন তাঁদের ফর্মগুলি জমা নেওয়া হবে। এখন কোনও টাকা দেওয়া যাবে না। নতুন করে ফর্মও দেওয়া হচ্ছে না।’’
যদিও বহু পরিবারের দাবি, ভোটের দিন ঘোষণার বহু আগেই বিয়ে ঠিক করেছেন তাঁরা। সরকারি অনুদানের উপর ভরসা করে বন্দোবস্তোও কর ফেলেছেন। এখন অথৈ জলে পড়েছেন তাঁরা। জেলা প্রশাসনের হিসবে, প্রতি মাসে রূপশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেতে দেড় হাজারের মতো আবেদন জমা পড়ে। তবে রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা জানান, বিয়ে একটা সামাজিক অনুষ্ঠান। অনেক কথাবার্তার পরে একটা বিয়ে ঠিক হয়। হঠাৎ করে বলা যায় না, বিয়ে পিছিয়ে দিন বা প্রকল্পের টাকা বিয়ের পরে দেওয়া হবে। আবার নির্বাচন বিধিও রয়েছে। তাঁর মতে, “আচরণবিধির ঊর্ধ্বে গিয়ে মানবিকতার খাতিরে কিছু করা গেলে স্বস্তি মিলতে পারে।’’
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি রয়েছে। তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে জানালে একটা সুরাহা হতে পারে।