নোংরার মধ্যে থেকেই পানীয় জল সংগ্রহ। নিজস্ব চিত্র।
প্রবল গরমেও মিলছে না তেষ্টার জল। অবস্থা এমন যে অনেককে জল কিনে খেতে হচ্ছে। একে সংসারে দুর্দশা, তার মধ্যে জল কিনতে গিয়ে নাজেহাল পূর্বস্থলী ২ ব্লকের তামাঘাটা এলাকার বাসিন্দারা। ভুক্তভোগীরা জানান, এই এলাকায় ভাগীরথীর ভাঙনের সমস্যা রয়েছে। ভাঙনের জেরে বেশ কিছু পরিবার গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছে অন্যত্র। বর্তমানে হাজার খানেক পরিবারের বাস। বাসিন্দাদের দাবি, তাঁতশিল্পের সঙ্গে এলাকার বহু মানুষ একসময় যুক্ত ছিলেন। শিল্পের দুর্দশার কারণে তাঁদের অনেকে অর্থ-কষ্টে ভুগছেন। এই পরিস্থিতিতেও পানীয় জল কিনে খেতে হচ্ছে বহু মানুষকে।
বাসিন্দারা জানান, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের একটি প্রকল্প থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল পৌঁছয় গ্রামের একাংশে। মাসখানেক আগে বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর কাজ করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাইপলাইন। বর্তমানে একটি জায়গায় ফাটা পাইপ থেকে জল পড়ছে বলেও দাবি। ওই জল পেতে গ্রামবাসীর মধ্যে লম্বা লাইন পরে যায়। অনেকে লাইনে দাঁড়িয়ে শেষ পর্যন্ত জল পান না। গ্রামের শেষ দিকে পূর্বপাড়ায় ১৭০ ঘর বাসিন্দার বাস। বছর দুয়েক আগে বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ দেওয়া হলেও এখনও পর্যন্ত জল পড়েনি। এই পরিস্থিতিতে কিনতে হচ্ছে পানীয় জল। এলাকার বাসিন্দা পেশায় খেতমজুর সাধন মণ্ডল বলেন, ‘‘লক্ষ্মীপুর সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২০ লিটারের পানীয় জলের জার কিনতে পাওয়া যায় ১০ থেকে ১৫ টাকা দরে। অনেকে সেই জল কিনছেন।’’ বাসিন্দা সৌভাগ্য মণ্ডল জানিয়েছেন, তাঁতশিল্পের দুর্দশার কারণে অনেকের হাতে কাজ নেই। এই পরিস্থিতিতে বাড়তি টাকা লাগছে জল কিনতে। গৃহবধূ শেফালী মণ্ডলের বক্তব্য, পানীয় জল না মেলায় রান্না সহ বেশ কিছু কাজ ভাগীরথীর জলে করতে হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এক আধিকারিকের মন্তব্য, ‘‘ফাটা পাইপ মেরামত করে জল পরিষেবা দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে।’’ পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘ওই এলাকার নানা জায়গায় মাটির তলার জলে আর্সেনিক আছে। সেই জল বেশি তোলা মানে বিপদ। এই পরিস্থিতিতে পানীয় জল ব্যবহারেও সচেতন হতে হবে এলাকার সাধারণ মানুষকে।’’