তৃণমুল কে আক্রমণ দিলীপ ঘোষের। — ফাইল চিত্র।
ধস কবলিত রানিগঞ্জ খনি এলাকায় পুনর্বাসন প্রকল্পে কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার পশ্চিম বর্ধমানে দলের রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে এসে পাল্টা অভিযোগ তুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তৃণমূল আশ্রিত লোকজন কয়লা চুরি করার কারণেই খনি অঞ্চলের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়েছে বলে দাবি করলেন তিনি।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী রানিগঞ্জের সঙ্গে জোশীমঠের পরিস্থিতির তুলনা টানেন। তিনি জানান, এলাকাবাসীর পুনর্বাসনের জন্য দশ বছর ধরে কেন্দ্রের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। কিন্তু পুনর্বাসন প্রকল্পের টাকা মিলছে না। ধস নামলে ২০ বছর মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। শুক্রবার দুর্গাপুরে দিলীপ ঘোষের পাল্টা বক্তব্য, “জোশীমঠে প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলছে বহু বছর ধরে। বিশেষজ্ঞেরা দেখছেন। কিন্তু রানিগঞ্জ, আসানসোলে দিদির ভাইয়েরা খুঁড়ে-খুঁড়ে বাড়ির নীচে চলে গিয়েছে। সকালে উঠে দেখবেন, বাড়ি-সহ মাটির নীচে চলে গিয়েছেন।’’ কে চুরি করছে, কার টাকা কে নিচ্ছে, তা সবাই জানেন দাবি করে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, হিমালয় দেখাবেন না। এখানে পাতাল প্রবেশ চলছে। সেটা বন্ধ করুন।”
সিপিএমের রাজ্য সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, ‘‘এলাকায় চোখ-কানা খোলা রাখলেই বোঝা যায়, বেআইনি ভাবে কয়লা কেটে ভূগর্ভ ফাঁকা করে দিচ্ছে তৃণমূল ও বিজেপির লোকেরাই। কয়লা চুরি আটকানোর দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারেরও। কারণ, তাদের সিআইএসএফের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এটা। তাই কয়লা চুরি নিয়ে কথা বলার অধিকার বিজেপিরও নেই। আদতে, রাজ্যের পুলিশ এবং কেন্দ্রের সিআইএসএফ— দু’পক্ষকের মদতে এই চক্র চলছে।’’
তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসনের যদিও দাবি, রাজ্য পুলিশ নিয়মিত অবৈধ খননের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। কিন্তু সংস্থার নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী ও সিআইএসএফ দায়িত্ব পালন না করায় কয়লা চুরি আটকানো যাচ্ছে না। তারা চাইলেই এই কারবার বন্ধ হয়ে যাবে দাবি করে শিবদাসনের বক্তব্য, ‘‘সিবিআইয়ের তদন্তে ইসিএলের একাধিক আধিকারিক কয়লা মাফিয়াদের সঙ্গে জেল খেটেছেন। তাতে এটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।’’ আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তাও দাবি করেন, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে নাকা তল্লাশি করে কয়লা পাচারে ধরপাকড় করা হচ্ছে। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযানও চলছে। ইসিএলের নিরাপত্তা বিভাগের জিএম শৈলেন্দ্রকুমার সিংহ জানান, তাঁরাও নিয়মিত অভিযান চালিয়ে কয়লা পাচার আটকাচ্ছেন।