বাঁ দিক থেকে, বার্নপুর প্রান্তিক ক্লাব ও আসানসোল আপকার গার্ডেন পুজো কমিটির মণ্ডপ। ছবি: পাপন চৌধুরী।
সুশান্ত বণিক
আসানসোল
সন্ধ্যা নামতেই আলোর উৎসব ও শক্তির আরাধনায় মেতে উঠবেন জেলাবাসী। থিম থেকে জনপ্রিয় স্থাপত্যের অনুকরণে তৈরি মণ্ডপের পাশাপাশি, ঐতিহ্যকেও ধরে রেখেছেন উদ্যোক্তারা। সব মিলিয়ে এ বারও জমজমাট শ্যামাপুজো।
দুর্গাপুজোয় যেমন আসানসোলের পুজো উদ্যোক্তারা নজরকাড়া মণ্ডপ উপহার দেন। তেমনই কালীপুজোয়ও নতুনের ছোঁয়া রয়েছে। যেমন ইস্পাত শহর বার্নপুরের সর্বজনীন পুজো। সম্প্রীতির মেলবন্ধনে শ্যামা আরাধনায় মেতে উঠেছেন বার্নপুরের রাঙাপাড়া নিউ অম্বেডকর ক্লাব। এলাকার হিন্দু ও মুসলিম, সম্প্রদায়ের মানুষজন এই ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত। মহফুজ খান, হাসিম খান, সোমনাথ চট্টরাজ, মহাদেব ভৌমিকেরা জানালেন, পুজোর আয়োজনের পাশাপাশি, সারা বছর তাঁরা নানা সংস্কৃতিক ও সামাজিক কাজ করে থাকেন। এ বার তাঁদের থিম ‘মঙ্গল ভবন’। প্রায় ১৫ ফুট উচ্চতার মাটির ঘট ও প্রায় ২,০০০ বিদ্যুৎবাতি দিয়ে মণ্ডপ সাজানো হয়েছে।
বার্নপুরের ছোটোদিঘারি ইউনাইটেড ক্লাব সর্বজনীন কালীপুজোর মণ্ডপ মায়াপুরের ইসকন মন্দিরের আদলের তৈরি করা হয়েছে। উদ্যোক্তারা জানান, পুজোকে কেন্দ্র করে এ বারও বিচিত্রানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। একটি ছোট মেলাও বসানো হচ্ছে। বার্নপুরের রাজস্থান ক্লাব সর্বজনীনের মণ্ডপ দক্ষিণ ভারতের একটি মন্দিরের আদলে তৈরি। অভিমন্যুর চক্রব্যূহ বানিয়ে সকলের নজর কাড়তে প্রস্তুত বার্নপুরের ইয়ং মেনস অ্যাসোসিয়েশন। বিশাল আকৃতির শিবমূর্তির মণ্ডপ সজ্জা দেখা যাবে বার্নপুরের প্রান্তিক ক্লাব আয়োজিত সর্বজনীন কালীপুজোয়। এ বারও আলোকসজ্জায় আধুনিকতার ছোঁয়া রেখেছেন আপকার গার্ডেন সর্বজনীন কালীপুজোর উদ্যোক্তারা। এ দিকে, বারাবনির পাঁচগাছিয়া সর্বজনীন মণ্ডপে কারুশিল্পকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। শিল্পীরা হাতের কাজে মণ্ডপকে রাঙিয়ে তুলেছেন। চিত্তরঞ্জনের ফতেপুর সর্বজনীন কালীপুজো উদ্যোক্তারা এ বারও রীতি মেনে বিশাল আকারের মন্দির অনুকরণে মণ্ডপ সাজিয়েছেন। পিছিয়ে নেই রূপনারায়ণপুর পশ্চিম রাঙামাটি সর্বজনীন, অদ্বিতীয়া সর্বজনীন পুজো উদ্যোক্তারা। তাঁরা সকলেই মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি করেছেন। রূপনারায়ণপুর এলাকার বিশেষ আকর্ষণ দেশবন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত মেলা। দেশবন্ধু পার্ক লাগোয়া কেব্লস মাঠে বসছে এই মেলা। চলে ১৫ দিন পর্যন্ত। কমবেশি ৪০০টি দোকান বসছে এ বার।
আসানসোল শিল্পাঞ্চলের কালীপুজোয় বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের। কাশীপুর রাজাদের আমলে ঘটা করে শুরু হয়েছিল এই পুজো। মন্দিরের ইতিহাসকে স্মরণ করে ভক্তদের ঢল নামে। পুজোর দিন সকাল থেকেই মন্দিরে ভক্তসমাগম হয়। রাতে পুজোর বিশেষ আয়োজন করা হয়। পুজোকে কেন্দ্র করে শিল্পাঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে বিশেষ নজর রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিশনারেটের কর্তারা। সরকারি কোনও নির্দেশ লঙ্ঘিত হলে কড়া পদক্ষেপ করার কথাও জানানো হয়েছে।