—প্রতীকী চিত্র।
এক দিনে ৭ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে দুর্গাপুর শহরে। তাই তড়িঘড়ি রবিবারেই জরুরি বৈঠক ডাকল পুরসভা। সব বরো এলাকার স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, পতঙ্গবিদকে নিয়ে বৈঠক করা হয়। সাফাই অভিযান জোর, মশার লার্ভা মারার কীটনাশক স্প্রে করা, গাপ্পি মাছ ছাড়া-সহ সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ায় জোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছর এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪২ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ২০ জন অন্যত্র আক্রান্ত হয়ে ফিরেছিলেন শহরে। আক্রান্তদের অধিকাংশই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কয়েক জনের চিকিৎসা চলছে। তবে তাঁদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। শনিবার শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ৭ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়। দুর্গাপুরে গত কয়েক বছর ধরেই ডেঙ্গি আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। ২০২৩ সালে দুর্গাপুরের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে পলাশডিহা ও সিটি সেন্টারে ডেঙ্গির প্রকোপ বড় আকার নিয়েছিল। পলাশডিহায় প্রায় ৭০ জন ও সিটি সেন্টারে প্রায় ৩৫ জন আক্রান্ত হন। এ বার যাতে ডেঙ্গি ছড়িয়ে না পড়ে, তাই রবিবার ছুটির দিনেও বিশেষ বৈঠক ডাকে পুরসভা।
বৈঠকে ছিলেন পুরসভার প্রশাসক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়, পুর কমিশনার আবুল কালাম আজাদ, এসিপি (দুর্গাপুর) সুবীর রায়, পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাখি তিওয়ারি, পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবব্রত সাহানা, ‘স্টেট আরবান ডেভলপমেন্ট অথরিটি’র (সুডা) পতঙ্গবিদ বিশ্বরূপ মিত্র প্রমুখ। মশার বংশবৃদ্ধি রোধ ও লার্ভা যাতে না বাড়ে সে জন্য ইতিমধ্যে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতা তৈরি, সাফাই, নর্দমায় গাপ্পি মাছ ছাড়া, কীটনাশক স্প্রে করার মতো নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুরসভা। এই সব ব্যবস্থা আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয় বৈঠকে।
পুরসভা সূত্রের খবর, বৈঠকে এক স্বাস্থ্যকর্মী জানান, বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়িতে খোলা জায়গায় বহু পরিত্যক্ত ভাঙাচোরা গাড়ি রয়েছে। বৃষ্টির জল জমছে সেই সব গাড়িতে। স্বাস্থ্যকর্মীরা গিয়ে যতটা সম্ভব কীটনাশক স্প্রে করেন। তিনি বলেন, “জমা জলে মশার লার্ভা বেড়ে ওঠে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে আমরা সে বিষয়ে সচেতন করে থাকি। কিন্তু থানা ও ফাঁড়ির গাড়িগুলির ক্ষেত্রে যদি পুলিশ এগিয়ে আসে, সমস্যা মিটবে। গাড়িগুলি ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করা হলে ভাল হয়।”
পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য রাখি জানান, শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে। তাই এ দিন পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বৈঠক হয়। স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে তাঁদের এলাকার সমস্যার কথা শোনা হয়। থানার পরিত্যক্ত গাড়িগুলি যাতে ঢাকা দেওয়া হয়, পুলিশকে সেই আর্জি জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকর্মীরা ওই সব গাড়িগুলিতে বাইরে থেকে স্প্রে করেন। কিন্তু ভিতরে সব জায়গায় কীটনাশক পৌঁছয় না। জল যাতে না জমে, সে জন্য সেগুলি ঢেকে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে পুলিশকে। পুলিশ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।” এসিপি (দুর্গাপুর) সুবীর রায় জানান, ‘‘শহরের তিনটি থানায় যে সব পরিত্যক্ত গাড়ি রয়েছে, দ্রুত সেগুলি ঢেকে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। ডেঙ্গি রোধে পুলিশ সব রকম সহযোগিতা করবে।’’