চলছে খনি ভরাট। নিজস্ব চিত্র
অবৈধ খনন বন্ধে ব্যবস্থার দাবিতে পশ্চিম বর্ধমানের রামনগরে সেলের খোলামুখ খনির রাস্তা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবরোধ করে সোমবার বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দাদের একাংশ। বিক্ষোভের জেড়ে খনির কয়লা উত্তোলন ও পরিবহণ বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর ১টা নাগাদ খনি কর্তৃপক্ষ অবৈধ খনিমুখগুলি ভরাটের কাজ শুরু করেন। এর পরে বিক্ষোভ থামে।
ওই গ্রামবাসীর অভিযোগ, বৈধ খনি এলাকায় অবৈধ খননের জেরে এক দিকে যেমন সম্পদ লুট হচ্ছে, তেমনই গ্রামও বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে উঠছে। অভিযোগ, খনি কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেও লাভ হয়নি। তাই অবরোধে শামিল হন তাঁরা। এ দিন সকাল ৮টা থেকে কয়েকশো গ্রামবাসী জড়ো হয়ে প্রথমে বরাকর-কল্যাণেশ্বরী রোড অবরোধ করেন। ঘণ্টাখানেক পরে, বাসিন্দারা রামনগর কোলিয়ারির কয়লা উত্তোলন ও পরিবহণ বন্ধ করে দেন। এর পরেই নড়েচড়ে বসেন খনি কর্তৃপক্ষ। তাঁদের তরফে বারবার কোলিয়ারির কাজ চালু করতে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু গ্রামবাসী জানিয়ে দেন, অবৈধ খনিমুখ ভরাটের কাজ শুরু না হলে খনির কাজ শুরু করতে দেওয়া হবে না।
পথ অবরোধ চলতে থাকায় বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। বরাকর থেকে কল্যাণেশ্বরী, দেন্দুয়া, মাইথনের লেফট্ ব্যাঙ্ক ও আশপাশের এলাকায় যাতায়াতের এটিই একমাত্র রাস্তা। কিন্তু সকাল থেকে অবরোধ শুরু হওয়ায় আটকে পড়েন অনেক যাত্রী। রাস্তার দু’প্রান্তে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে যানবাহন। পুলিশ গিয়ে রামনগর কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও অবরোধকারীরা তা মানতে চাননি। পুলিশ অবরোধ তোলার চেষ্টা করলে বচসাও বাধে। শেষে পুলিশের তরফে খনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়।
এ দিন বিক্ষোভকারীদের তরফে স্থানীয় বাসিন্দা গণেশ ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘‘বৈধ খনিতে ছোট-ছোট গর্ত করে বেআইনি খনন করছে এক দল দুষ্কৃতী। ওরা জমির নীচের অংশ দুর্বল করে দিচ্ছে। তাতে ধসের আশঙ্কা বাড়ছে।’’ আর এক বাসিন্দা হারাধন ঘোষের অভিযোগ, ‘‘এই বিপজ্জনক অবস্থার কথা খনি কর্তৃপক্ষকে বহু বার জানিয়েও ফল হয়নি।’’
খনির জেনারেল ম্যানেজার তরুণকান্তি রায় এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে লায়েকডিহি খোলামুখ খনি থেকে কয়লা তোলা হচ্ছে। সেই এলাকাতেই ছোট-ছোট গর্ত করে অবৈধ খনন চালিয়েছে কিছু লোক। এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ তরুণকান্তিবাবুর নেতৃত্বে সে খনিমুখগুলি পাথর দিয়ে ভরাট করা শুরু হয়। তার পরে অবরোধ ওঠে।