বাড়ছে দুষ্কর্ম, জোরদার পুলিশি টহলের দাবি

দুর্গাপুরের বিধাননগর ও লাগোয়া এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ তুলে সরব হল বিরোধীরা। বুধবার এই অভিযোগে বিধাননগর ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম। তাদের অভিযোগ, এই অঞ্চলে নানা অপরাধমূলক কাজকর্ম বেড়ে গিয়েছে ইদানীং। পুলিশকে বারবার জানিয়েও ফল হচ্ছে না। মঙ্গলবার রাতে জনবহুল এলাকায় বাড়িতে ঢুকে যে ভাবে ঠিকাদারকে খুন করা হয়েছে, তাতে আতঙ্কিত বাসিন্দারা। পুলিশের অবশ্য আশ্বাস, এলাকায় টহল বাড়ানো হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৩৭
Share:

আবেদনপত্র জমা দিতে ফাঁড়িতে সিপিএম নেতা-কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র।

কখনও মিলছে মহিলার অগ্নিদগ্ধ দেহ। কখনও আবার রাস্তায় পড়ে থাকছে মৃতদেহ। এ বার তো একেবারে বাড়িতে ঢুকে খুনের ঘটনা ঘটে গেল।

Advertisement

দুর্গাপুরের বিধাননগর ও লাগোয়া এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ তুলে সরব হল বিরোধীরা। বুধবার এই অভিযোগে বিধাননগর ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম। তাদের অভিযোগ, এই অঞ্চলে নানা অপরাধমূলক কাজকর্ম বেড়ে গিয়েছে ইদানীং। পুলিশকে বারবার জানিয়েও ফল হচ্ছে না। মঙ্গলবার রাতে জনবহুল এলাকায় বাড়িতে ঢুকে যে ভাবে ঠিকাদারকে খুন করা হয়েছে, তাতে আতঙ্কিত বাসিন্দারা। পুলিশের অবশ্য আশ্বাস, এলাকায় টহল বাড়ানো হবে।

শহরের নিউ টাউনশিপ থানা এলাকায় অন্যতম অভিজাত অঞ্চল এই বিধাননগর। বেশ কয়েকটি ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যানেজমেন্ট, পলিটেকনিক ও ফার্মাসি কলেজ রয়েছে এখানে। বাইরে থেকে হাজার-হাজার পড়ুয়া সেগুলিতে পড়তে আসেন। তাঁদের অনেকেই বিধাননগরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন। এ ছাড়া কর্মসূত্রেও বহু মানুষ বাইরে থেকে এসে এখানে থাকেন। বহু সমবায় আবাসন গড়ে উঠেছে। সেগুলিতে বহু প্রবীণ মানুষজন রয়েছেন। অভিযোগ, এই সব আবাসনে নিরাপত্তারক্ষীরা থাকেন ঠিকই, কিন্তু পরিচয় যাচাই করার ব্যবস্থা নেই। বহিরাগতদের মুখের কথা বিশ্বাস করেই রক্ষীরা তাঁদের ভিতরে ঢোকার অনুমতি দিয়ে দেন। মঙ্গলবার রাতে যে ভাবে স্থানীয় ইস্পাতপল্লির একটি সমবায় আবাসনের বাড়িতে ঢুকে সেখানে ভাড়া থাকা এক ঠিকাদারকে দুষ্কৃতীরা খুন করেছে তাতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।

Advertisement

সম্প্রতি বিধাননগর এলাকায় বেশ কয়েকটি অপরাধমূলক কাজকর্ম হয়েছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। তাঁরা জানান, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় জহর নবোদয় বিদ্যালয়ের কাছে এক অগ্নিদগ্ধ মহিলার দেহ উদ্ধার হয়। তার কিছু দিন আগে শাস্ত্রী অ্যাভিনিউ লাগোয়া জায়গায় এক মহিলাকে খুন করে দেহ ফেলে যায় দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার রাতে খুনের ঘটনার পরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে শুরু করেছেন বলে দাবি করেন এলাকার অনেক বাসিন্দারা। তাঁরা অভিযোগ করেন, আগে পুলিশি টহলদারি নজরে আসত। কিন্তু ইদানীং সে ভাবে পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায় না। তাই দুষ্কৃতীদের সাহস বেড়েছে।

অবিলম্বে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করার দাবিতে এ দিন ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএমের জেমুয়া-বিধাননগর লোকাল কমিটি। বিক্ষোভকারীদের পক্ষে কবি ঘোষ বলেন, ‘‘বিধাননগর আগে শান্তিপূর্ণ এলাকা ছিল। কিন্ত সম্প্রতি একের পর এক অপরাধ হচ্ছে। শীঘ্র প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা দাবি জানিয়েছি।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, এলাকায় ড্রাগ-সহ নানা নেশার সামগ্রী বিক্রির ঠেক তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি নতুনপল্লি এলাকায় মদ, গাঁজা, জুয়ার ঠেকের প্রতিবাদ করতে গেলে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। সোমবার গভীর রাতে সগড়ভাঙা এলাকায় আর এক প্রতিবাদীর বাড়িতে পিছনের দরজা ভেঙে ঢুকে দুষ্কৃতীরা হুমকি ও গালিগালাজ করে বলে অভিযোগ। এই দু’টি ঘটনা অন্য থানা এলাকার। কিন্তু উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে বিধাননগরেও এমন ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন সিপিএমের নেতারা।

পুলিশ অবশ্য জানায়, ইতিমধ্যে শহরের যে সমস্ত এলাকায় মদ-গাঁজার ঠেক চলার সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে টহল বাড়ানোর পরিকল্পনা হয়েছে। এডিসিপি (পূর্ব) অমিতাভ মাইতির আশ্বাস, সংশ্লিষ্ট এলাকাতেও নজরদারি বাড়ানো হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement