মিষ্টি তৈরি। নিজস্ব চিত্র।
দোল উৎসবকে ঘিরে পূর্বস্থলীর দোগাছিয়ার মেলা এখন ‘মিষ্টি মেলা’ বলে পরিচিত হয়ে উঠেছে। রায়চৌধুরী বাড়ির দোল উৎসবকে ঘিরে দোলের দিন থেকে চার দিনের মেলায় হরেক পসরা এলেও এখানকার পেল্লায় আকারের মিষ্টিই ক্রেতাদের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। এ বারও সেখানে ১০০০ টাকা থেকে ২০ টাকা মূল্যের মিষ্টি কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। অনেকে খাচ্ছেন। আবার আত্মীয়দের বাড়িতে পাঠানোর জন্য কিনেও নিয়ে যাচ্ছেন।
এলাকায় স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ডাকঘর, জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের প্রকল্পের মতো বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজে জমিদান করার খ্যাতি রয়েছে দোগাছিয়ার রায়চৌধুরী পরিবারের। দোল উৎসব তাঁদের পারিবারিক মন্দিরে হলেও, তাতে এলাকার সবাই মাতেন। পরিবারের মূল মন্দির থেকে প্রতিবার দোলের দিন গোপীনাথ, রাধিকা, গোবিন্দ, মদনমোহনের বিগ্রহ পালকিতে নিয়ে যাওয়া হয় ৮০ মিটার দূরে দোলমন্দিরে।
দোল উৎসবের আয়োজকদের তরফে প্রদীপ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘বহু বছর ধরে পারিবারিক দোল উৎসব হচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে, উৎসবকে ঘিরে স্থানীয় মানুষের উন্মাদনা বাড়ছে। পরিবারের ট্রাস্টি বোর্ড উৎসবের খরচ বহন করে।’’
এ বারও মেলার পাশাপাশি যাত্রাপালা, বাউলগান-সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। গ্রামের বহু বাড়িতে এ উপলক্ষে আত্মীয়েরাও ভিড় করেছেন। মেলার বিভিন্ন দোকানে কেনাকাটি চললেও সবার নজর থাকে মিষ্টির স্টলে।
মেলায় আসা এক মিষ্টি বিক্রেতা অরূপ ঘোষ বলেন, ‘‘অন্তত দু’-তিনটি পঞ্চায়েত থেকে লোকজন মেলায় মিষ্টি কিনতে আসেন। এ বার মেলায় সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা মূল্যের একটি মিষ্টি তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া, ৮০০, ৫০০, ৪০০, ২০০, ১০০, ৫০ ও ২০ টাকা দামের মিষ্টিও রয়েছে।’’ তিনি জানান, পেল্লায় আকারের মিষ্টির জন্য অনেকে আগাম বরাত দিয়ে যান। অনেকে আবার ভিন্ রাজ্যে আত্মীয়ের বাড়িতে মিষ্টি পাঠাবেন বলে বিশেষ ভাবে প্যাকেট করতে বলেন।
দীর্ঘদিন এই মেলায় মিষ্টি বিক্রি করছেন বাসুদেব ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘গত ৩০ বছর ধরে এখানকার ক্রেতাদের মধ্যে বড় মিষ্টি কেনার প্রবণতা বেড়েছে। সে জন্য এই মেলা ‘মিষ্টি মেলা’ বলেও পরিচিত
হয়ে উঠেছে।’’
দোগাছিয়ার বাসিন্দা নিমাই ঘোষ জানান, বহু মানুষ শুধু মিষ্টি কেনার জন্যই এই মেলায় আসেন।
উৎসবের আয়োজকদের অন্যতম অভীক রায়চৌধুরীর কথায়, ‘‘এত বেশি পরিমাণে এবং বড় আয়তনের মিষ্টি আর কোথাও বিক্রি হয় বলে শুনিনি।’’