বাড়ির সামনে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হলেন দুর্গাপুরের এক সিটু নেতা। বুধবার রাতে ইস্পাতনগরীর বি-জোনে আর্যভট্ট রোডে রঞ্জিত শর্মা নামে ওই নেতার বাড়িতে হামলা চালায় কয়েক জন দুষ্কৃতী। তিনি এবং তাঁর পরিবারের আরও চার জন জখম হন। রঞ্জিতবাবু-সহ দু’জনকে দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট হাসপাতালে চিকিত্সার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সিটুর অভিযোগ, সামনেই দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) ‘ফেরো স্ক্র্যাপ নিগম লিমিটেড’-এ সংগঠন স্বীকৃতির নির্বাচন রয়েছে। কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে রঞ্জিতবাবুর উপরে হামলা চালিয়েছে আইএনটিটিইউসি। আইএনটিটিইউসি যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রাত পৌনে ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। রঞ্জিতবাবু সেই সময়ে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। হঠাত্ কয়েক জন এসে তাঁর উপরে চড়াও হয়। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে মার খান পরিবারের আরও কয়েক জন সদস্য। আশপাশের লোকজন ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা পালায়। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছয়। আসেন সিটুর নেতা-কর্মীরাও। আহত পাঁচ জনকে উদ্ধার করে পাঠানো হয় দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট হাসপাতালে। রঞ্জিতবাবু ও তাঁর দাদা প্রদীপবাবু হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাকি তিন জনকে প্রাথমিক চিকিত্সার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ডিএসপি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ডিএসপি-র ভিতরে ‘ফেরো স্ক্র্যাপ নিগম লিমিটেড’-এর সংগঠন স্বীকৃতির নির্বাচন রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম দফতরের তত্ত্বাবধানে এই নির্বাচন হবে। সেই ভোটে সিটুর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আইএনটিটিইউসি। সিটু অনুমোদিত ‘ফেরো স্ক্র্যাপ নিগম লিমিটেড এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’-এর সহকারী সম্পাদক রঞ্জিতবাবু। সিটুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুবীর সেনগুপ্ত অভিযোগ করেন, “স্বচ্ছ নির্বাচন হলে আমাদের জয় নিশ্চিত। তা বুঝতে পেরেই আইএনটিটিইউসি হামলা চালিয়েছে।”
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে আইএনটিটিইউসি। সংগঠনের বর্ধমান জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, “আমাদের এমন পরিস্থিতি নয় যে কাউকে ভয় দেখিয়ে নির্বাচনে জিততে হবে। শ্রমিক-কর্মীরা আমাদের সঙ্গে আছেন।” উল্টে তাঁর দাবি, সিটুরই দু’টি গোষ্ঠী রয়েছে সেখানে। এ দিনের ঘটনার সঙ্গে তার যোগ থাকতে পারে। সিটু অবশ্য সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।
সম্প্রতি ‘ডিএসপি কনজিউমার কো-অপারেটিভ সোসাইটি’র নির্বাচন ঘিরেও সিটু এবং আইএনটিটিইউসি পরস্পরের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিল। মনোনয়ন তোলার সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরে দেখা যায়, একমাত্র আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত ‘ডিএসপি মজদুর ইউনিয়ন’-এর প্রার্থীরা ছাড়া আর কেউ মনোনয়ন তোলেননি। সিটু অনুমোদিত ‘হিন্দুস্থান স্টিল এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন’-এর অভিযোগ, তাদের কাউকে মনোনয়ন তুলতেই দেয়নি আইএনটিটিইউসি। এমনকী, সংগঠনের দুই সদস্য মার খেয়ে ভর্তি হন দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট হাসপাতালে। দুর্গাপুর থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় সিটু। যদিও আইএনটিটিইউসি দাবি করেছিল, সিটুর উপরে হামলা বা মনোনয়ন তুলতে বাধা দেওয়ার কোনও ঘটনার সঙ্গে তাদের কেউ জড়িত নয়।