ফাইল চিত্র
পরপর চারটি বাড়ির দেওয়ালে ও খেলার মাঠে ফাটল ধরল। মঙ্গলবার বিকেলে আসানসোল পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের জামুড়িয়ার শিবপুরের ধোয়াডাঙা ও ১৬ নম্বর এলাকার ঘটনা। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এলাকায় অবৈধ কয়লা খননের রমরমা ও পরিত্যক্ত খনি ঠিক ভাবে ভরাট না করার জন্যই এই হাল।
স্থানীয় বাসিন্দা লক্ষ্মী কোড়া সংবাদমাধ্যম ও প্রশাসনের কাছে জানান, বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ মৃদু আওয়াজ হয়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি দেখেন, তাঁর বাড়ির একটি দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। একই ঘটনা ঘটে বিনয় হাঁসদা, মহাদেব কোড়া ও গোড়া কোড়ার বাড়িতেও। এলাকাবাসীর একাংশ জানান,বাড়িতে ফাটলের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সন্ধ্যায় এলাকার মাঠের একাংশে ফাটল ধরে। বসে যায় মাঠের একাংশ।
এই এলাকায় ফাটল বা ধস কোনও নতুন ঘটনা নয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাস চারেক আগেই এক ব্যক্তির প্রায় বিঘাখানেক চাষজমি ১৫ ফুটেরও বেশি গভীর হয়ে বসে যায়। বছরখানেক আগে এলাকার দু’টি বাড়িতে ফাটল ধরে। বারবার এমন ঘটনায় তাঁদের জীবন-জীবিকা বিপন্ন হচ্ছে বলে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
কিন্তু বারবার কেন এই ঘটনা? বিনয়বাবু, লক্ষ্মীদেবী-সহ এ দিনের ‘ক্ষতিগ্রস্তেরা’ জানান, এলাকায় কয়লা-শিল্পের রাষ্ট্রায়ত্তকরণের আগে ভূগর্ভস্থ খনি ছিল। অভিযোগ, সেখান থেকে কয়লা তোলার পরে, ঠিক পদ্ধতিতে বালি ভরাট করা হয়নি। আরও অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে বিপত্তি বাড়িয়েছে এলাকার অদূরে থাকা ‘অবৈধ খনি’। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দাদের অভিযোগ, অবৈধ খনির জন্য এলাকায় জল-সঙ্কট তৈরি হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর জল সরবরাহ করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। দু’টি চাপাকল থাকলেও সেগুলির একটি বিকল। তা ছাড়া, অবৈধ খননের জেরে এলাকার জলস্তর নেমে যাওয়ায় তিনটি পুকুর ও বেশির ভাগ কুয়ো শুকিয়ে গিয়েছে। এলাকাবাসী জানান, তাঁরা ইসিএল ও জামুড়িয়া থানার কাছে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য আর্জি জানিয়েছেন।
এই পরিস্থিততে সরব হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও। সিপিএম নেতা মনোজ দত্ত, তৃণমূল নেতা সাধন রায়দের বক্তব্য, “ইসিএল-ও দায়িত্ব এড়াতে পারে না। সংস্থাকে ফাটল ধরা বাড়িগুলি সংস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে।’’
ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’