কাঁকসায় রবিবার সূর্যকান্ত মিশ্রের সভায়। নিজস্ব চিত্র।
এক সময়ের লালদুর্গ কাঁকসায় বামেরা কার্যত ক্ষয়িষ্ণু শক্তিতে পরিণত হয়েছে বলে কটাক্ষ করে বিরোধীরা। সেই কাঁকসায় সিপিএমের সভায় নজরকাড়া ভিড় হল রবিবার। সভায় জন সমাগম দেখে আপ্লুত দলের নেতারাও। তাঁদের দাবি, ঘুরে দাঁড়িয়েছে বামেরা।
এ দিনের সভায় মূল বক্তা ছিলেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। রাজ্যে বিকল্প সরকার গড়ার ডাক দেন তিনি। কাঁকসায় বাম আমলে তৈরি বেশ কয়েকটি কারখানা তৃণমূল জমানায় বন্ধ হয়েছে। সূর্যবাবু বলেন, ‘‘কাঁকসাতেই সাতটি কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছে এই আমলে। কর্মসংস্থানও হয়নি। অন্য রাজ্যগুলি ভাল কাজ করলেও, এ রাজ্য অনেকটাই পিছিয়ে।’’ এ প্রসঙ্গে তৃণমূল ব্লক সভাপতি দেবদাস বক্সীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘তৃণমূল আমলে কোনও কারখানা বন্ধ হয়নি। নতুন অনেক কারখানা তৈরি হয়েছে। কর্মসংস্থানও হয়েছে।’’ কর্মসংস্থান প্রশ্নে কেন্দ্রকে বিঁধে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘‘মোদী বলেছিলেন, বছরে দু’কোটি মানুষের চাকরি হবে। অথচ কিছুই হয়নি। মানুষের কাজ চলে যাচ্ছে।’’
বিধানসভা ভোটের ফল ত্রিশঙ্কু হলে বামেরা কাকে সমর্থন করবে জানতে চাওয়া হলে সূর্যবাবু বলেন, ‘‘তৃণমূলের প্রয়োজন হলে বিজেপি সমর্থন করবে। আবার বিজেপির প্রয়োজন হলে তৃণমূল সমর্থন করবে। আমরা নিজেরাই ধর্মনিরপেক্ষ সরকার গঠন করব।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘ক্ষমতায় এলে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে বিকল্প সরকার. প্রত্যেক বছর এসএসসি-র মাধ্যমে নিয়োগও
করা হবে।’’
এ দিন কাঁকসায় সিপিএমের সভায় মানুষের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মতো। বহু বাস ও ছোট ট্রাকে করে কাঁকসার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাম কর্মী-সমর্থকেরা সভায় এসেছিলেন। আদিবাসী নৃত্যের মাধ্যমে সূর্যকান্তকে অভ্যর্থনা জানানো হয়। কাঁকসার যে এলাকায় এ দিন সভা ছিল, সেই এলাকাটি দুর্গাপুর পূর্ব বিধানসভা এলাকার অন্তর্ভুক্ত। ২০১৬ বিধানসভা ভোটে ওই কেন্দ্রে সিপিএম জয়ী দলেও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের নিরিখে বিজেপির থেকে অনেকটাই পিছিয়ে বামেরা। এ দিন সভায় উপস্থিত ছিলেন দুর্গাপুর পূর্বের বিধায়ক সন্তোষ দেবরায়, সিপিএমের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়-সহ জেলা ও ব্লকের নেতৃত্ব।
কাঁকসার বিজেপি নেতা রমন শর্মা বলেন, ‘‘সিপিএম যাই বলুক না কেন, জনগন রয়েছে বিজেপির সঙ্গেই।’’