ভোটকেন্দ্রের প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র
আশা ছিল। তাই মনোনয়নের জন্য মেলা বাড়তি দিনে ই-মেল করেছিলেন তাঁরা। মঙ্গলবার আদালত ই-মনোনয়ন বৈধ বলে জানানোয় তাই সিপিএম নেতাদের মুখে হাসি। তবে জেলা সিপিএম সূত্রের খবর, যে ২৬টি মনোনয়ন তারা ই-মেল মারফত পাঠিয়েছিল, তার মধ্যে ১২টি পাঠানো হয়েছিল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। তাই শুধু সেগুলিই বিবেচ্য হবে বলে মনে করছেন দলের নেতারা।
মঙ্গলবার আদালত ২৩ এপ্রিল বিকেল ৩টের মধ্যে ই-মেলে পাঠানো সিপিএমের মনোনয়ন জমা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, তাঁরা সে দিন মোট ২৬টি মনোনয়ন ই-মেলে কমিশনের কাছে পাঠান। তার মধ্যে সালানপুরের আছড়া পঞ্চায়েতের দু’টি, সামডির চারটি, আল্লাডির একটি, রানিগঞ্জের বল্লভপুরের দু’টি, রতিবাটি ও জেমারি পঞ্চায়েতে একটি করে এবং দুর্গাপুর মহকুমার জেমুয়া পঞ্চায়েতের একটি মনোনয়ন বিকেল ৩টের মধ্যে পাঠানো হয়েছিল। গৌরাঙ্গবাবু বলেন, ‘‘এই মনোনয়নগুলি গ্রাহ্য হলে সালানপুর ও রানিগঞ্জের নানা পঞ্চায়েতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়তে চলেছে শাসক দল।’’
সিপিএম সূত্রের খবর, দুর্গাপুর মহকুমা থেকে পঞ্চায়েতের ১০টি, পঞ্চায়েত সমিতির দু’টি এবং জেলা পরিষদের তিনটি আসনে মনোনয়ন পাঠানো হয়। পঞ্চায়েত স্তরে কাঁকসার গোপালপুরে ৩টি, মলানদিঘির দু’টি, অণ্ডালের উখড়ার দু’টি, রামপ্রসাদপুর ও শ্রীরামপুরের একটি এবং দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের জেমুয়া পঞ্চায়েতের একটি আসনে ই-মনোনয়ন পাঠানো হয়। অণ্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির দু’টি এবং কাঁকসা, পাণ্ডবেশ্বর ও অণ্ডাল থেকে জেলা পরিষদের একটি করে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আসানসোল মহকুমায় সালানপুর থেকে সাতটি ও রানিগঞ্জ থেকে চারটি মনোনয়ন পাঠানো হয়।
সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, ২৩ এপ্রিল ব্লক বা মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে বাধা পেয়ে তাঁরা নানা পঞ্চায়েত এলাকার ওই মনোনয়নগুলি ই-মেল করেছিলেন। দুর্গাপুরের সিপিএম নেতাদের অভিযোগ, দলের প্রার্থীরা সে দিন সিটি সেন্টারের অফিসে জড়ো হলেও দুষ্কৃতীরা তা ঘিরে রেখেছিল। তা সত্ত্বেও প্রার্থীদের লুকিয়ে মহকুমাশাসকের অফিসে পাঠালে মনোনয়ন ছিঁড়ে দেওয়া হয়। অণ্ডালে ব্লক অফিসেও একই পরিস্থিতি ছিল বলে নেতাদের দাবি।
পরিস্থিতি বুঝে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়ন ই-মেল করা হয় দাবি করে সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ রায়সরকার বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের স্বার্থে রায় দিয়েছে আদালত। আমরা খুশি।’’ তবে এ নিয়ে বিশেষ চিন্তা করতে নারাজ শাসক দলের নেতারা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসনের কথায়, ‘‘আমরা তো চাই বিরোধীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক। ভোট হলেই বোঝা যাবে ফল কী হয়।’’
আসানসোলের মহকুমাশাসক প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘বিষয়টি এখনও বিচারাধীন। আমরা খতিয়ে দেখছি।’’ দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরাও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।